ইসলামিক স্টেট খোরাসান, সংক্ষেপে আইসিস-কে। ইরান, তুর্কমেনিস্তান আর আফগানিস্তানকে একত্রে এককালে বলা হতো খোরাসান। সেই খোরাসানের নাম নিয়েই ২০১৪ সালের শেষ দিকে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে উত্থান শুরু হয় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের আফগান শাখার। চরম নির্মমতা দেখিয়ে সে সময়ে খুব দ্রুতই বিশ্বজুড়ে আলোচনায় উঠে আসে আইসিস-কে।
আফগানিস্তানের ভেতরে-বাইরে মসজিদসহ নানা জায়গায় হামলার ইতিহাস আছে আইসিস-কে'র। ইরানে জোড়া বোমা হামলায় শতাধিক প্রাণহানির ঘটনায় আইসিস-কে সম্পৃক্ত বলে চলতি বছরের শুরুতে নিশ্চিত করে যুক্তরাষ্ট্র। যোগাযোগ ব্যবস্থায় আড়ি পেতে ওই তথ্য পায় মার্কিন গোয়েন্দারা। এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে রুশ দূতাবাসে প্রাণঘাতী আত্মঘাতী বোমা হামলারও দায় স্বীকার করে আইসিস-কে।
২০২১ সালে কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলা চালিয়ে ১৩ মার্কিন সেনাসহ ২০০ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার দায়ও স্বীকার করেছিল আইসিস-কে। চলতি মাসের শুরুতেই মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষ মার্কিন সেনা কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছিলেন, কোনরকম পূর্বসতর্কতা ছাড়াই ছয় মাস বা আরও কম সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোতে বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে আইসিস-কে।
কিন্তু সব বাদ দিয়ে কেন রাশিয়ায় হামলা চালালো সংগঠনটি? বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে পুতিনের বিরুদ্ধে মুখর আইসিস-কে। মুসলিমদের ওপর নিপীড়নে রাশিয়াকে সহযোগী হিসেবেও দেখে সংগঠনটি। এছাড়া মধ্য এশিয়াভিত্তিক বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের প্রতিও সমর্থন রয়েছে আইসিস-কে'র। এসব সংগঠন আগে থেকেই নানা ইস্যুতে লড়ছে রুশ আধিপত্যের বিরুদ্ধে।
জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের সক্রিয় সব আঞ্চলিক সহযোগীর মধ্যে অন্যতম আইসিস-কে। ২০১৮ সালের পর থেকে সদস্য সংখ্যা কমেছে গোষ্ঠীটির। ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারের পর থেকে আইসিস-কে'সহ আফগানিস্তানের বিভিন্ন চরমপন্থি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মার্কিন গোয়েন্দা সক্ষমতা এখন অনেকটাই কম বলে জানায় ওয়াশিংটন।