যুদ্ধ
বিদেশে এখন
0

চীনের মাটিতে মিয়ানমারের বোমাবর্ষণ!

মিয়ানমারের কাচিন প্রদেশে রক্তক্ষয়ী সংঘাত জোরদারের মধ্যেই বোমা পড়েছে চীনের মাটিতে। বিদ্রোহীদের আক্রমণে নাজেহাল সেনাবাহিনী। ১০টি নিরাপত্তা চৌকি ও দু'টি সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর শুরু করে নির্বিচার বোমাবর্ষণ। বিদ্রোহীদের উৎখাতের চেষ্টায় মরিয়া জান্তা রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে এবং পুড়িয়ে মারছে মানুষকে, উঠেছে এমন অভিযোগও।

বিদ্রোহী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির বিভিন্ন আস্তানা লক্ষ্য করে ক'দিন ধরেই নির্বিচার বোমা হামলা চালাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হামলার তীব্রতায় কয়েকটি বোমা পড়েছে প্রতিবেশী চীনের ভূখণ্ডেও।

সীমান্তে চীনের দিক থেকে ধারণ করা একটি ভিডিও ছড়িয়েছে অনলাইনে, যেখানে চীনের ভেতরে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। ভিডিওতে বলা হয়, ধোঁয়ার সূত্রপাত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিমান হামলায়। কমপক্ষে তিনটি বোমা চীনের ভেতরে পড়েছে বলে জানিয়েছে সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের প্রত্যক্ষদর্শীরা।

দেশটির উত্তরাঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সক্রিয় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো গেল বছর সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ অভিযান শুরু করে। পরাশক্তি চীনের মধ্যস্থতায় চীন-মিয়ানমার সীমান্তে এতোদিন অস্ত্রবিরতি কার্যকর থাকলেও এখন তা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর খবর, কাচিন প্রদেশের লাজিয়া শহরের আবাসিক এলাকাগুলোতেও শুক্রবার (৮ মার্চ) সকাল থেকে বিমান হামলা শুরু করে সেনাবাহিনী। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে স্থলযুদ্ধে তীব্র লড়াই হয় সেনাবাহিনী আর বিদ্রোহীদের মধ্যে। সেদিনই চীন সীমান্তের কাছে ১০টি নিরাপত্তা চৌকি ও দু'টি সামরিক ঘাঁটি বিদ্রোহীরা দখল করে নিলে মরিয়া হয়ে ওঠে জান্তা সরকার।

লাজিয়ার কাছে কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দেয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইনের আরাকান আর্মিও। চীন সীমান্ত সংলগ্ন ১২০ মাইল দীর্ঘ একটি সড়কজুড়ে চলছে যুদ্ধ। রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে সড়কপথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ভামো, মোমাউক ও ওয়াইংমাও শহর।

এদিকে, উত্তরের শান প্রদেশে পা-ও শহরে সেনাবাহিনী নিষিদ্ধ রাসায়নিক বোমা ফেলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গেল সোমবার থেকে শহরটিতে জান্তা সেনাদের সঙ্গে লড়াই শুরু হয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী পা-ও ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির। বিদ্রোহীদের দাবি, শহরের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় সেনাবাহিনীর ফেলা রাসায়নিক বোমায় অক্সিজেন সংকট, ক্লান্তি, মাথাঘোরা, দ্রুত শ্বাস ও চুলকানির সমস্যায় ভুগছে ভুক্তভোগীরা। এ দাবির সত্যতা যাচাই করা যায়নি।

অন্যদিকে, বিদ্রোহী যোদ্ধাদের পুড়িয়ে মারছে সেনাবাহিনী, জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের এমন অভিযোগ ফের প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমারের সামরিক শাসকদল। গেল বছরের ওই ঘটনার ভিডিও ক্লিপ গত ১ মার্চ জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৫৫তম অধিবেশনে উপস্থাপন করা হয়। অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জান্তার দাবি স্পষ্ট মিথ্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে ইরাবতীর প্রতিবেদনে।

ইএ