বিদেশে এখন
হুতিদের হামলায় কার্গো জাহাজের ৩ ক্রু নিহত
এডেন উপসাগরে বার্বাডোজের কার্গো জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রাণহানিসহ আগুন ধরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসময় জাহাজটিতে ২০ জন ক্রু ছিলেন। সমুদ্রে জাহাজ চলাচল নিরাপদ করতে হুতিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এডেন উপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিল ট্রু কনফিডেন্স নামের কার্গো জাহাজটি। ইয়েমেন নৌবাহিনীর পরিচয় দিয়ে একটি জাহাজ কাছে এসে কার্গোটির পথ পরিবর্তনের নির্দেশ দেয়। এর কিছু সময় পর ওই অঞ্চলে বিকট শব্দ হয়। সঙ্গে সঙ্গে জাহাজটি থেকে ধোঁয়া বের হতে থাকে। আগুন লেগে জাহাজটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এসময় কার্গো জাহাজটিতে এক ভারতীয়সহ চারজন ভিয়েতনামী ও ১৫ জন ফিলিপাইনের নাগরিক ছিলেন। এদের মধ্যে ৩ জন ক্রু নিহত হয়েছেন। হুতিদের হামলায় এই প্রথম প্রাণহানির ঘটনা ঘটলো। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৬ জন।

এছাড়া জাহাজটিতে তিনজন সশস্ত্র গার্ড ছিলেন যাদের দু'জন শ্রীলঙ্কার আর একজন নেপালের। নাবিকদের মধ্যে অনেকেই লাইফ বোটে করে দ্রুত পালিয়ে যান। তবে এখনও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।

জাহাজে হামলার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে হুতি বিদ্রোহীরা। গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধ না হলে, তারা সমুদ্রপথে হামলা চালিয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানা বা তাদের সাথে কোনো সংযোগ আছে এমন সব জাহাজেই হামলা চালানোর হুঁশিয়ারি দেন হুতির সামরিক মুখপাত্র।

হুতির সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারা বলেন, নিপীড়িত ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব পালনে অবিচল আছে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী। গাজায় চলমান ইসরাইলি আক্রমণ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত লোহিত সাগর ও আরব সাগরে অভিযান চালিয়ে যাবে হুতি গোষ্ঠী।

হতাহত নাবিকদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সমুদ্রে জাহাজ চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হুতিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বেপরোয়াভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের কারণে বিশ্ব বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক জলসীমায় নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তাদের হামলায় বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সারা বিশ্বের সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

মালবাহী ট্রু কনফিডেন্স মূলত গ্রিসের মালিকানাধীন জাহাজ। যা লাইবেরিয়ার একটি ঠিকানায় নিবন্ধিত। দুটি সংস্থা নিশ্চিত করেছে, জাহাজটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পর্ক ছিল না। যদিও শুরুতে জাহাজটি মার্কিন ওকট্রি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের মালিকানায় ছিল। হুতিদের দাবি, ট্রু কনফিডেন্স আমেরিকান জাহাজ। ট্রাক ও ইস্পাতের জিনিস নিয়ে কার্গো জাহাজটি চীন থেকে সৌদি আরবে যাচ্ছিল।

গত সপ্তাহে হুতিদের হামলায় যুক্তরাজ্যের বিশালাকৃতির রুবিমার জাহাজটি ডুবে যায়। এর কয়েকদিন পর যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ লক্ষ্য করে ফের বড় হামলা চালায় তারা। এতে আরব ও লোহিত সাগরে সমুদ্রপথে চলাচল অনিরাপদ হয়ে পড়ে। বিকল্প রুটে পণ্য পরিবহনে সময় ও খরচ বেড়ে যায়। যার নেতিবাচক প্রভাব বিশ্ব বাজারে পড়ছে। প্রায় চার মাস ধরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইয়েমেনের সশস্ত্র এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি।

এওয়াইএইচ