গোলাগুলি আর মর্টারশেলের বিকট শব্দে কাঁপছে মিয়ানমার। ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে এরইমধ্যে দেশটির সামরিক বাহিনীকে হটিয়ে রাখাইনের বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। প্রাণ গেছে বহু জান্তা সেনার। এখন রাজধানী সিত্তের দখল নিয়ে পুরো রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পাওয়ার পথে এগুচ্ছে বিদ্রোহীরা।
এ অবস্থায় আরাকান যোদ্ধাদের ঠেকাতে সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে জান্তা বাহিনী। এরজন্য রাখাইনবাসীকে পালাতে না দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি আরাকান সদস্যরা যাতে সহজেই সিত্তে শহরে ঢুকতে না পারেন, তারজন্য পোড়ামাটি নীতি অর্থাৎ সেতু-কালভার্ট উড়িয়ে দিচ্ছে জান্তা সেনারা। এমন সময় আতঙ্কিত স্থানীয়রা বিপুল অর্থ খরচ করেও নদী পারি দিচ্ছেন।
জান্তা সরকারকে হটিয়ে রাখাইনের দখলে নেয়ার দ্বারপ্রান্তে থাকা আরাকান আর্মির উত্থান ২০০৯ সালে। কাচিন ইন্ডিপেন্ডেনস আর্মির সহায়তায় চীন সীমান্তবর্তী রাজ্যে মাত্র ২৬ সদস্য নিয়ে গোষ্ঠীটি সংগঠিত হয়। সেই নিজেদের ভূমির কর্তৃত্ব ফিরে পেতেই লড়াইয়ে লিপ্ত হয় তারা। বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩০ হাজার।
কিন্তু মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে কুপোকাত করার মতো এতো অত্যাধুনিক অস্ত্র কোথায় পেল আরাকানরা? বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়- আরাকান আর্মির বেশিরভাগ অস্ত্র ও গোলাবারুদের জোগানদাতা কাচিন ইন্ডিপেন্ডেনস আর্মি ও তাদের মিত্র ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মি। থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তের কালোবাজারিদের কাছ থেকেও অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাচ্ছে তারা। আর এসব অস্ত্রের বেশিরভাগই চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন বলছে, আরাকানদের বেশিরভাগ অস্ত্র আসে চীন থেকে। এমনকি চীনের দেয়া ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে তাদের কাছে। অস্ত্র ছাড়াও আরাকান আর্মিকে ৯৫ শতাংশ অর্থায়নও করে বেইজিং। এছাড়া জান্তা বাহিনীর নিপীড়ন থেকে রক্ষায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির পরিচালনায় লক্ষ্য লক্ষ্য কিয়েট চাঁদা দিয়ে থাকে রাখাইনের অভিবাসী কর্মীসহ স্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। এতে সামরিক শক্তির চেয়ে আরাকানের সাধারণ মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন তাদের জন্য বড় শক্তি বলে দাবি আরাকান আর্মির।