বিদেশে এখন
0

মিয়ানমার ছাড়তে চায় অনেক তরুণ

মিয়ানমারে তরুণদের বাধ্যতামূলক সেনাবাহিনীতে যোগদানের ঘোষণার পর দেশ ছাড়তে উঠে পড়ে লেগেছে সাধারণ মানুষ।

পাসপোর্ট অফিসের বাইরে লম্বা লাইন, দূতাবাসগুলোর সামনে ভিড় লেগে আছে। এ পরিস্থিতিই প্রমাণ করে মিয়ানমারে নাগরিকদের বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে যোগদানের ঘোষণার পর কী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সশস্ত্র বিভিন্ন গোষ্ঠীর কাছে কোণঠাসা হয়ে বেশ বিপদে আছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার।

জাতিসংঘ বলছে, সেনাবাহিনী আর বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এই সংঘাতে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ গেছে, প্রায় ২৬ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তরুণ বার্মিজরা, যারা জান্তা সরকারকে প্রতিহত করতে বিক্ষোভ করে যাচ্ছে, তাদের এখন সেনাশাসনের পক্ষে যুদ্ধ করার ঘোষণা এসেছে। তারা বলছেন, এই সরকারের হয়ে নিজ দেশের মানুষের সঙ্গে যুদ্ধ করা মানে সরকারকে মেনে নেয়া।

বেশিরভাগই দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টায় আছে। মুহূর্তের মধ্যে দূতাবাসগুলোর সামনের লাইন লম্বা হয়ে যাচ্ছে। ড্যানিশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মিয়ানমারের গবেষক জাস্টিন চেম্বার্স বলেন, বিপ্লবে সংহতি প্রকাশ করা তরুণদের বিক্ষোভ থেকে সরানোই এই নির্দেশনার মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি সেনা দলে নিয়োগ জান্তা সরকারের দুর্বলতা প্রকাশ করছে, মানুষকে এখন রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করে যাচ্ছে সেনা সরকার।

২০১০ সালে প্রথম মিয়ানমারের সেনাসদস্য নিয়োগের আইন প্রকাশিত হয়। ১০ ফেব্রুয়ারির আগ পর্যন্ত সেটা কার্যকর হয়নি। সেনা সরকার বলছে, দেশটির ৫ কোটি ৬০ লাখ মানুষের মধ্যে এক তৃতীয়াংশই সেনাবাহিনীতে যুক্ত হতে পারবে। জান্তা সরকার জোরপূর্বক ক্ষমতা দখলের পর এই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পিছিয়ে পড়েছে। বিরোধীপক্ষকে সমর্থনের অভিযোগ এনে দেড় লাখের কাছাকাছি শিক্ষক-শিক্ষিকা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বহিস্কার করা হয়।

জান্তা সরকারের কারো কাছে জবাবদিহিতা নেই বলে যেকোন সময় কাউকে গ্রেফতার বা গুম করতে পারে। যে কারণে ধনী পরিবারগুলো দেশ ছাড়ছে, তাদের গন্তব্য থাইল্যান্ড আর সিঙ্গাপুর। অনেকে আবার জান্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বিরোধী গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দিচ্ছে।

ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট বলছে, গেল অক্টোবরে শুরু হওয়া জান্তাবিরোধী অভিযানে মিয়ানমারের ৬০ শতাংশের বেশি ভূখণ্ড এখন বিরোধীদের দখলে। যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অব পিসের বার্মা প্রোগ্রামের কান্ট্রি ডিরেক্টর জ্যাসন টাওয়ার বলেন, জান্তা কতোটা বেপরোয়া হয়ে গেছে, তা সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগের সিদ্ধান্তই প্রমাণ করে। যেভাবে নাগরিকদের মধ্যে দেশ ছাড়ার প্রবণতা বাড়ছে, তাতে মানবিক আর শরণার্থী সংকট বাড়বে।