আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল করতে নতুন বছরের শুরু থেকে ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া। কিয়েভের পশ্চিমাঞ্চলের বুচা জেলায় বনের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোয় তৈরি হয়েছে বিশাল গর্ত। বিধ্বস্ত হয়েছে আশেপাশের ঘরবাড়ি।
এক বাসিন্দা বলেন, ‘বিস্ফোরণে ঘরবাড়ি যেভাবে ধ্বংস হয়েছে, আর মেরামত করা যাবে না।’
আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘সকালে ঘরে ছিলাম। পর পর বিকট শব্দের দুটি বিস্ফোরণে ঘুম ভাঙে। দেখি সব ভেঙে গেছে।’
ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া। দেশটির দোনেৎস্কের আভদিভকা শহরে রাশিয়ার সেনাদের শক্তিশালী অবস্থান থাকায় সেখান থেকে সেনা সরিয়ে নিচ্ছে কিয়েভ। দেখা দিয়েছে সমরাস্ত্র সংকট। অন্যদিকে রাশিয়া হামলার জন্য পাঠিয়ে যাচ্ছে সেনাবহর।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এই শহরের দখল খুব শিগগিরই হারাবে ইউক্রেন। শহরটি মস্কোর হামলায় এর মধ্যেই ধ্বংসপ্রায় হয়ে গেছে। এর মধ্য দিয়ে দুই প্রদেশের দখল নিয়ে নির্বাচন করা সহজ হবে মস্কোর জন্য।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিবরি বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধক্ষেত্রের অবস্থা ভালো না। আভদিভকায় ভয়াবহ সংঘাত হচ্ছে। ইউক্রেনের সেনারা এই শহরে টিকে থাকার যুদ্ধ করছে। কারণ রাশিয়ার অবস্থান প্রতিদিন শক্তিশালী হচ্ছে। কংগ্রেস ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার অনুমোদন না দেয়ায় ইউক্রেন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছে না। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেখানে অনেক দুর্বল হয়ে গেছে।
সংকটের এমন সময় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে পরিবর্তন এনেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ভালেরি জালুঝোনির পরিবর্তনে সেনাপ্রধান এখন আলেকজান্ডার সিরস্কি । পশ্চিমারা যেখানে অস্ত্র সহায়তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে, সেখানে দেশের অভ্যন্তরে লাখ লাখ ড্রোন আর উড়ন্ত বোমা তৈরির কাজ করছে কিয়েভ। চলতি বছর অন্তত ১০০ কোটি ডলারের ড্রোন তৈরি করবে ইউক্রেন। প্রশাসন বলছে, ২০২২ সালের তুলনায় শুধু গেল ডিসেম্বরেই ড্রোনের সরবরাহ ৫০ শতাংশ বেড়েছে।
পশ্চিমা সামরিক সহায়তার ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল কিয়েভ। ন্যাটো প্রধান জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেন, ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার অনুমোদন বারবার ব্যর্থ হওয়ার ফলাফল যুদ্ধক্ষেত্রে ভোগ করতে হচ্ছে কিয়েভকে। মার্কিন সিনেটে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র সহায়তার বিল পাশ হলেও প্রতিনিধি পরিষদে পাশ হওয়ার অপেক্ষায় বিলটি।
সংবাদ মাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস বলছে, ইউক্রেন চরম সমরাস্ত্র সংকটের মধ্যে আছে। নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, মার্চের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র শেষ হয়ে যাবে কিয়েভের।