বিদেশে এখন
0

ইন্দোনেশিয়ায় চলছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ইন্দোনেশিয়ায় চলছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দ্বীপপুঞ্জ অধ্যুষিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় অর্থনীতির এই দেশটিতে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর স্থলাভিষিক্ত কে হবেন, তা নিয়ে ত্রিমুখী লড়াইয়ে নেমেছেন প্রার্থীরা।

আগামী ৫ বছরের জন্য জোকো উইদোদোর উত্তরসূরি খুঁজতে গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চায় ব্যস্ত দেশটির ভোটাররা। বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশটির পঞ্চম সাধারণ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২০ কোটি। শুধু প্রেসিডেন্টই নয়, এর পাশাপাশি ভোটাররা ভাইস প্রেসিডেন্ট, ৫৮০টি আসনের পার্লামেন্ট সদস্য ও প্রায় ২০ হাজার জাতীয়, প্রাদেশিক ও জেলা পর্যায়ের প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করবেন।

প্রায় ১৭ হাজার দ্বীপ সমৃদ্ধ ইন্দোনেশিয়ায় তিনটি গ্রিনিচ মান সময় ব্যবহার করা হয়। তাই একদিন ব্যাপী নির্বাচনের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে নির্বাচন চলে দেশটিতে। নির্বাচনের দিন সাধারণ ছুটি থাকায় প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি ভোটারদের উপস্থিতি থাকে।

২০১৪ ও ২০১৯ সালে টানা দুইবার ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের আসনে বসেন জোকো উইদোদো। এই দুইবারই তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রবোও সুবিয়ান্টোকে হারান। তবে ২০২০ সালে জোকো তার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন সুবিয়ান্টোকে। সেই সুবিয়ান্টোই এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হট ক্যান্ডিডেট। তার রানিংমেট অর্থাৎ ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়ছেন জোকোর ছেলে জিবরান রাকা।

তবে সাবেক সেনা কর্মকর্তা সুবিয়ান্টোর বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। সত্তরের দশকে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুর দখলের সময় সুবিয়ান্টোর ভূমিকা ছিলো বিতর্কিত। নব্বইয়ের দশকে গণতন্ত্রপন্থী ২০ জনের বেশি কর্মীকে অপহরণের ঘটনায় জড়িয়েছে তার নাম। যাদের অনেককে আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ১৯৯৮ সালে সুবিয়ান্টোকে সামরিক বাহিনী থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তবে জরিপে বাকি প্রার্থীদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে জেরিন্ডা দলের প্রার্থী প্রবোও সুবিয়ান্টো।

দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন জাকার্তার সাবেক গভর্নর আনিস বাসওয়েদান। যুক্তরাষ্ট্র থেকে পড়াশোনা শেষে ইন্দোনেশিয়ার রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি, দায়িত্ব নেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। নির্বাচনে জয়ী হলে রাজধানীকে নুসানতারা শহরে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। ৫৪ বছর বয়সী আনিস নির্বাচনে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। তার রানিং মেট হিসেবে আছেন দেশের সবচেয়ে বড় পিকেবি’র প্রধান মুহাইমিন ইস্কান্দার।

অন্যদিকে পিডিআই দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন জাভার সাবেক গভর্নর গানজার প্রানোয়ো। ৫৫ বছর বয়সী এই প্রার্থী তার নির্বাচনী প্রচারণায় অগ্রাধিকার দিচ্ছেন জনগণের স্বাস্থ্য, বাসস্থান, খাদ্য ও দুর্নীতি দমনের ওপর। ঘোষণা দিয়েছেন সরকারি কর্মচারি ও শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো। গানজারের রানিং মেট হিসেবে রয়েছেন বর্তমান নিরাপত্তামন্ত্রী মাহফুদ মোহাম্মদ।

নির্বাচনে কোনো প্রার্থী যদি ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পান, সেক্ষেত্রে ২৬ জুন অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় দফার নির্বাচন।