করোনা মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী কর্মসংস্থান হারান অনেক মানুষ। সারা বিশ্বেই বাড়ে বেকারত্বের হার। পরে ভ্যাকসিনের আশীর্বাদে ধীরে ধীরে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করে পেশাজীবীরা, কমে আসতে থাকে বেকারত্ব। গেলো বছর এ সংখ্যা ৫ দশমিক ৩ থেকে কিছুটা কমে ৫ দশমিক ১ শতাংশে উঠে আসে।
তবে চলতি বছর আবারও বেকারত্বের হার বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন-আইএলও। সম্প্রতি "ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক ট্রেন্ডস" শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। এতে বলা হয়েছে চাকরির সন্ধানে থাকা মানুষের তালিকায় যুক্ত হবে প্রায় ২০ লাখ বেকার। এতে বৈশ্বিক বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়াবে ৫ দশমিক ২ শতাংশে।
আইএলও'র পাশাপাশি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনেও একই ধরনের পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে। ইইউ এর তথ্যমতে গত বছরের একদম শেষে অর্থাৎ নভেম্বরে বেকারত্বের হার কমেছিলো ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
যা এর আগের মাসে ছিলো ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছর মূল্যস্ফীতি এবং মানুষের আয় কমার কারণে জি-টোয়েন্টিভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের জীবনমান তেমন বাড়বে না। তাছাড়া দ্রুত জীবনমান উন্নত হবে এমন প্রত্যাশাও নেই।
উচ্চ এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলোর পার্থক্য পর্যবেক্ষণ করেছে আইএলও। গত বছর উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে চাকরি প্রত্যাশীদের হার ছিলো ৮ দশমিক ২ শতাংশ, আর বেকারত্বের হার ছিলো ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।
বিপরীতে নিম্নআয়ের দেশগুলোতে জব গ্যাপ রেট ছিলো ২০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বেকারত্বের হার ছিলো ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া চরম দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী কর্মজীবীর সংখ্যা গত বছর বেড়েছে।
একই সময়ে মাঝারি দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী কর্মজীবীর সংখ্যা বেড়েছে ৮৪ লাখ। এদিকে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদন বলছে, গেলো বছর আয় বৈষম্য বেড়েছে। লিঙ্গ ও বয়স বৈষম্য কমলেও তা এখনো বিলোপ হয়নি।
মহামারির পর চাকরিতে নারী কর্মীর সংখ্যা বাড়লেও বৈষম্য রয়েই গেছে। বিশেষ করে উদীয়মান অর্থনীতির দেশে এ বৈষম্য বেশি।
আইএলওর মহাপরিচালক গিলবার্ট হংবো বলেছেন, বিশ্বে দক্ষ জনশক্তির অভাব রয়েছে। কারখানাগুলোতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ায় ডিজিটাল মনোপলি তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ সমস্যা বাড়ছে। এ কারণেও বেকারত্বের হার বাড়ছে। তাই এ পরিস্থিতি দ্রুত ও কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা জরুরি।