ইকুয়েডরে গত মঙ্গলবার সরাসরি সম্প্রচার চলাকালে একটি টেলিভিশন স্টেশনে ঢুকে স্টুডিওর সবাইকে জিম্মি করে একদল বন্দুকধারী। সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায় সম্প্রচার। পরে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশের বিশেষ ইউনিট। জড়িত সন্দেহে আটক করে অন্তত ১৩ জনকে। এমন ঘটনার পর দেশটিতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমন মন্দার ঝুঁকিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো।
দেশটির মাদকচক্রের নেতা এডলফো মাসিয়াস রোববার কারাগার থেকে পালিয়ে যান। মূলত এরপর থেকেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে সব অপরাধী চক্র। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশজুড়ে ৬০ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেয় সরকার।
তবুও অপরাধী চক্রের সহিংসতায় উত্তাল হয়ে উঠে পুরো দেশ। হতাহতের শিকার হন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যসহ বেশ কয়েকজন।
সাধারণ মানুষ বলেন, 'শহরটি স্থবির হয়ে পড়েছে। আমাদের মনে শান্তি নেই কারণ আবার এমন সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে। ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থাও দিন দিন খারাপ হচ্ছে। অনেক দোকানপাট পুরোপুরি বন্ধ, কিছু কিছু আছে সাময়িক সময়ের জন্য খোলা হচ্ছে। তবে ক্রেতাদের আনাগোনা কম।'
এ অবস্থায় শিগগিরই শান্তি পুনরুদ্ধারের আশ্বাস দিয়েছে সেনাবাহিনী। চালানো হচ্ছে ব্যাপক ধরপাকড়। এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। অনেক জিম্মিকে উদ্ধার করা ছাড়াও জব্দ করা হয়েছে বহু অস্ত্র ও গোলাবারুদ। চুরি যাওয়া অনেক যানবাহন ও যোগাযোগ সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়েছে।
ইকুয়েডর আর্মড ফোর্সেসের জয়েন্ট কমান্ডো চিফ অ্যাডমিরাল জেইমে ভেলা বলেন, 'আমরা নিরাপত্তা ব্লক তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। ইতোমধ্যে ফলাফলও পাচ্ছি। তাই ইকুয়েডরবাসীকে আরও ধৈর্যশীল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশের উপর বিশ্বাস রাখুন। কারণ আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শান্তি পুনরুদ্ধার করার জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।'
গত বছরের অক্টোবরে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন ৩৬ বছর বয়সী ড্যানিয়েল নোবোয়া। মাদক-সংশ্লিষ্ট সহিংসতা দূর করার অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি। ইতোমধ্যে অপরাধীচক্রে বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন এই তরুণ প্রেসিডেন্ট।