খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ক্রিসমাস। চলে এসেছে নতুন বছরও। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো আলোকসজ্জায় সেজেছে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোসহ বিভিন্ন শহর।
বড়দিনের কেনাকাটায় রাশিয়ার শপিংমল, সুপারশপে ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদের। যদিও রুশ মুদ্রা রুবলের নিম্নমুখী প্রবণতা, পশ্চিমা নানা নিষেধাজ্ঞায়, আমদানি পণ্যের ব্যয় বৃদ্ধিসহ দ্রব্যমূল্য দ্বিগুণ বেড়েছে দেশটিতে। এমন অবস্থায় খাবারসহ নিত্যপণ্য কেনায় কাটছাঁট করছেন রুশ নাগরিকরা।
বড়দিনের উৎসবে কেক,পিঠাসহ রাশিয়ান পরিবারগুলো ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খাবার তৈরিতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেন ডিমের। এবার এই আমিষ উপকরণটি কিনতে রীতিমতো নাভিশ্বাস ভোক্তাদের।
চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় রাশিয়ায় প্রতিদিনেই বাড়ছে ডিমের দাম। ব্লুমবার্গের তথ্য বলছে, বছরের শেষে দেশটিতে ডিমের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। সেন্ট পির্টাসবার্গের সুপারশপেও মিললো একই চিত্র।
সরবরাহ কম থাকায় নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে ডিমের কেনার সংখ্যা। ফলে খালি হাতেই ফেরত যাচ্ছেন অনেক ক্রেতা। কিছু পাওয়া গেলেও চড়া দামে নাভিশ্বাস ক্রেতাদের।
ক্রেতারা বলেন, 'এক সপ্তাহ ধরে দোকানে যাইনি, কিন্তু আগের তুলনায় ডিমের দাম নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। অন্তত ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু ডিম ৩০ রুবলে বিক্রি হচ্ছে, আবার কিছু ডিম ৪০ রুবলও ছাড়িয়েছে। বুঝতে পারছিনা আমাদের কি করা উচিত।'
এমন পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে বন্ধু রাষ্ট্রগুলো থেকে কোনো শুল্ক ছাড়াই ১২০ কোটি ডিম আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রুশ প্রশাসন। এক বিবৃতিতে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, আগামী বছরের প্রথম ছয় মাস শুল্ক ছাড়াই ডিম আমদানি করতে পারবেন ব্যবসায়ী। যার ফলে ডিমের বাজারের ভারসাম্য ফিরবে বলে আশা তাদের।
এদিকে আগামী বছরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে, নিত্য প্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েছেন ভ্লাদিমির পুতিনও। সম্প্রতি ডিম দাম বৃদ্ধির জন্য সরকারের ব্যর্থতা স্বীকার করে, দু:খ প্রকাশ করেছেন প্রভাবশালী এই নেতা।
ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে প্রায় দুই বছরে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পাহাড় জমেছে। তবে নজিরবিহীন এসব নিষেধাজ্ঞার মুখেও আশ্চর্যজনকভাবে এগুচ্ছে দেশটির অর্থনীতি।