ভারতে চলতি বছর দ্বিগুণ দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। এর ওপর বর্ষার মৌসুম শেষে মহারাষ্ট্রে অসময়ে বৃষ্টিতে ক্ষেতেই নষ্ট হয় বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ, ১৩৬ লাখ হেক্টর জমি থেকে চাষাবাদ নেমে আসে মাত্র ১২ লাখ হেক্টরে। অথচ ২০২২ সালের তুলনায় চলতি বছর ৫৮ লাখ হেক্টর বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষের কথা ছিল।
বাজার নিয়ন্ত্রণে গেল আগস্টে পেঁয়াজ রপ্তানি সীমিত করার লক্ষ্যে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে নয়া দিল্লি। এরপর অক্টোবরে প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য ঠিক করা হয় ৮শ' ডলার।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, পেঁয়াজের সর্বভারতীয় খুচরা মূল্য গেল মাসের শেষে ৯৪ শতাংশের বেশি বেড়ে কেজি প্রতি প্রায় ৫৮ রুপিতে পৌঁছায়, যা এক বছর আগে ছিল ৩০ রুপির নিচে। অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে পেঁয়াজের দাম বাড়ে ৫৮ শতাংশ। কিছুতেই কাজ না হওয়ায় সবশেষে আসে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত।
তবে এতে হিতে বিপরীত হয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার শনিবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম ৭শ'-৮শ' রুপি থেকে এক লাফে নেমে এসেছে ২শ'-৩শ' রুপিতে।
মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে শীতকালীন ফসল হিসেবে ব্যাপক আবাদ হয় পেঁয়াজের। এ বছর প্রকৃতির রোষে আগেই ক্ষতির মুখে কৃষকরা। তারওপর কোন আলোচনা ছাড়াই রপ্তানি বন্ধে পেঁয়াজের পাইকারি দাম টনপ্রতি ৫শ' রুপি করে যাওয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে দেখা দিয়েছে তীব্র অসন্তোষ।
গেল ক'দিনে বিভিন্ন রাজ্য ও অঞ্চলে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকরা। পেঁয়াজ ফেলে সড়ক-মহাসড়ক অবরোধও করা হয়েছে অনেক জায়গায়। মহারাষ্ট্রের নাসিকে মহাসড়ক বন্ধ করে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটও ডেকেছেন কৃষকরা।
২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে মরিয়া বিজেপি সরকার। বিপরীতে পার্লামেন্টের চলতি অধিবেশনে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কৃষকদের শ্রম উপেক্ষার অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস।
প্রকাশ্যে মোদি সরকারের বিরোধিতা না করলেও কৃষকদের স্বার্থ উপেক্ষা পুরো রাজ্যে অসন্তোষ বয়ে আনতে পারে বলে শঙ্কা বাড়ছে বিজেপি সমর্থিত মহারাষ্ট্রের শিব সেনা সরকারের মধ্যেও, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
এদিকে ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় বাংলাদেশের মতোই পেঁয়াজের জন্য বিকল্প বাজারের দ্বারস্থ হয়েছে মালদ্বীপ, মালয়েশিয়াও।