১৯৩০ এর দশকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হার্বার্ট ক্লার্ক হুভারের নেতৃত্বে কার্যকর হয়েছিল স্মুট-হাওলি আইন। আইনটির মাধ্যমে সারাবিশ্ব থেকে আমদানিকৃত পণ্যে প্রায় ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ২৫টির বেশি দেশ সে সময় মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করে।
প্রায় ১০০ বছর আগের ওই শুল্কযুদ্ধের প্রভাবে দেশে দেশে বেড়ে গিয়েছিল নিত্যপণ্যের দাম, ৬৫ শতাংশ পড়ে গিয়েছিল বিশ্ববাণিজ্য ১০ বছরের বেশি সময় স্থায়ী হয়েছিল গ্রেট ডিপ্রেশন বা অর্থনৈতিক মহামন্দা, মাশুল গুণেছিল সারা বিশ্ব। শতবর্ষ আগের ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তির শঙ্কায় আবারও তটস্থ বিশ্ব।
চীনের স্থানীয় একজন বলেন, 'চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত অপ্রত্যাশিত নয়। দাম বাড়লে মার্কিন পণ্য কেনা বাদ দেবো।'
অন্য একজন বলেন, 'অর্থনীতির জন্য আখেরে এ পদক্ষেপ কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না। উল্টো অর্থনীতিতে বিশাল দাগ ফেলে যাবে। সবকিছু অনেক ব্যয়বহুল হয়ে যাবে এ পদক্ষেপের ফলে।'
৩১তম মার্কিন প্রেসিডেন্টকে অনুসরণ করলেন ৪৭তম প্রেসিডেন্টও। অস্থির চিত্তের ডোনাল্ড ট্রাম্প ৮০'র দশক থেকে একটি বিশ্বাসে স্থির, আর তা হলো মার্কিন অর্থনীতিতে গতি ফেরানোর একমাত্র কার্যকর উপায় শুল্ক। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে বিশ্বের ১৮৫টি দেশ ও অঞ্চলের ওপর ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সম্পূরক শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি। প্রতিক্রিয়ায় গণহারে হতাশা জানালেও নমনীয়ভাবেই পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছে অনেক দেশ। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা শুল্কারোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, 'আন্তঃআটলান্টিক বাণিজ্যে বিদ্যমান বাধা দূর করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আমরা সবসময় প্রস্তুত। একইসাথে পাল্টা ব্যবস্থা নিতেও প্রস্তুত। আলোচনা ব্যর্থ হলে নিজেদের স্বার্থ ও ব্যবসা রক্ষার খাতিরে আরও পদক্ষেপের প্রস্তুতিও চলছে।'
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা বলেন, '২০১৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ বিদেশি বিনিয়োগকারী জাপান। যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপে আমরা প্রচণ্ড হতাশ এবং একতরফা শুল্ক প্রত্যাহারে মার্কিন প্রশাসনকে অনুরোধও করেছি।'
মার্কিন পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বহির্বিশ্বের আরোপিত শুল্কে যুক্তরাষ্ট্র বহুকাল ধরে ভুগছে দাবি করে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে নতুন করে এই শুল্ক আরোপ করলো ট্রাম্প প্রশাসন। অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান অন্য দেশের ওপর শুল্ক আরোপ নয় মন্তব্য করে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক বসানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশটির তৃতীয় শীর্ষ বাণিজ্যিক অংশীদার চীনও।