মেক্সিকো-কানাডার ওপর ২ এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপ স্থগিত

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
0

মেক্সিকো ও কানাডার অধিকাংশ পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্কারোপ ২ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মেক্সিকান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে সন্তুষ্টির পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও বহাল রয়েছে দুই দেশের অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের পণ্যে আমদানি শুল্ক। এদিকে শুল্কারোপের মাধ্যমে চীনের ওপর চাপ প্রয়োগ করে ভালো সম্পর্কের আশা করা বোকামি বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক যুদ্ধে আবারো নাটকীয় মোড়। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) কানাডা ও মেক্সিকোর অধিকাংশ পণ্যে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক দোসরা এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের আশা, এই সময়ের মধ্যে ভয়াবহ মাদক ফেন্টানিলের প্রবাহ রুখতে কাজ করবে প্রতিবেশী দুই দেশ। তবে সুবিধার বাইরে থাকছে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ঘোষিত শুল্কারোপ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়নি। আগামী সপ্তাহ থেকে এটি কার্যকর হচ্ছে। অন্যদিকে পারস্পরিক শুল্ক কার্যকর হবে ২ এপ্রিল থেকে। ভারত ও চীনের মতো উচ্চ শুল্ক হারের দেশগুলো এর আওতায় পড়বে।’

শুল্কারোপ স্থগিতের কৃতিত্বের পুরোটাই মেক্সিকান প্রেসিডেন্টের। কারণ ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে ফেন্টানিলের প্রবাহ রুখতে নিজেদের অগ্রগতি তুলে ধরেন শেইনবম। যাতে সন্তুষ্ট হয়ে মেক্সিকোর পাশাপাশি কানাডাকেও বিনা শুল্কের সুবিধার সময় বাড়িয়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি খুবই ভালো মানুষ। শুল্কের মতো আমাদের মধ্যকার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের ফোনালাপে মাদকসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।’

দুই নেতার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ থাকলেও সম্মানজনকভাবে ফোনালাপে অংশ নেয়ায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শেইনবম। কানাডার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর থেকে পাল্টা শুল্কারোপ স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন মেক্সিকো।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেইনবম বলেন, ‘আমরা কোনো বিষয়ে একমত না হতেই পারি। তবে এ নিয়ে আলোচনার সুযোগ রাখা প্রয়োজন। সম্মানের সঙ্গে বিষয়গুলো নিষ্পত্তিতে কাজ করা উচিত। ট্রাম্পের সঙ্গে তিনবার ফোনালাপে আমি এই সম্মান পেয়েছি। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ।’

এদিকে, মার্কিন শুল্ক নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দাবি করেন, বেইজিংকে চাপ প্রয়োগ করে ভালো সম্পর্কের আশা করা বোকামি। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য দ্বিচারিতা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক দুই দেশের জন্যই ফলপ্রসূ। তবে কোনো দেশেরই চীনের ওপর চাপ প্রয়োগ করে সুসম্পর্ক রাখার চিন্তা মাথায় আনা উচিত নয়। এমন দ্বিচারিা স্থিতিশীল সম্পর্কে আঘাত হানবে। পাশাপাশি পরস্পরের ওপর ভরসাও নষ্ট করবে।’

বৈশ্বিক অর্থনীতি ব্যবস্থাকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর শুল্কারোপ কার্যকর করছে যুক্তরাষ্ট্র। নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে এই দাবি করেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। দাবি করেন, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বাড়ছে, রক্ষা করা হচ্ছে দেশীয় শিল্প। একইসঙ্গে চলছে সমঝোতা।

ইএ