তুলনামূলক কমদামে বৈদ্যুতিক গাড়ি সরবরাহ করে বিশ্ববাজারে সারা ফেলেছে চীন। যার কারণে অনেকটাই দুশ্চিন্তায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। এই খাতে নিজেদের সুরক্ষার কথা ভেবে গেল মে মাসে চীনা গাড়ি আমদানির ওপর শুল্কের হার বাড়ায় ওয়াশিংটন। একমাস না যেতেই ১২ জুন ইউরোপীয় ইউনিয়নও ঘোষাণা দেয় ৪ জুলাই থেকে অতিরিক্ত শুল্কা কার্যকরের।
এ অবস্থায় বেশ কয়েকদিন ধরেই চীন-ইউরোপের বাণিজ্য সম্পর্কে বইছে ঝড়ো হাওয়া। ইতোমধ্যে চীন সতর্ক করেছে যে, তাদের বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি এমন কার্যকলাপ অব্যাহত রাখে তাহলে এটি পুরোপুরি বাণিজ্যযুদ্ধে মোড় নেবে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হে ইয়াদং বলেন, 'ইইউ কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের বাস্তব ও আইনগত ভিত্তি নেই। এটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম উপেক্ষা করে। ন্যায্য প্রতিযোগিতামূলক অধিকার ক্ষুণ্ণ করে। চীন এই পদক্ষেপের দৃঢ় বিরোধিতা করে এবং অধিকার রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে চীনা কোম্পানি।'
ঠিক এমন সময় চীন সফরে জার্মানির অর্থমন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি কমাতে দু'দেশের মধ্যে সহযোগিতামূলক আলোচনা করতে এসে ইউরোপের সাথে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা কমানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিলেন তিনি।
তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল এবং তুর্কিয়ের মতো দেশগুলো চীনকে শাস্তি দিতে শুল্ককে ব্যবহার করেছিল। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিষয়টি ভিন্ন। চীনকে 'শাস্তি' দেয়ার উদ্দেশ্যে শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়নি ইইউ। বরং- চীনা কোম্পানিগুলোর ভর্তুকি থেকে ইউরোপীয় কমিশন অন্যায়ভাবে উপকৃত হয়েছে কি-না তার পরীক্ষা চলছে।'
বৈঠকে চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ঝেং শানজি বলেন, 'চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানির উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করায় উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যকার বৈরিতা কমাতে, জার্মানি মধ্যস্থতাকরী হিসেবে নেতৃত্ব দেবে। ভর্তূকি নয়, দক্ষ জনবল থাকার কারণেই চীনে এগিয়ে যাচ্ছে বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্প।'
ঝেং শানজি'র সাথে বৈঠকের পর, চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাওর সাথেও কথা বলেছেন হ্যাবেক। যেখানে ইইউ ট্রেড কমিশনার সাথে চীনা পণ্যের উপর শুল্ক বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন জার্মানির অর্থমন্ত্রী।