প্রযুক্তি সংবাদ
তথ্য-প্রযুক্তি
সফল হয়নি অ্যাপলের যেসব প্রকল্প
প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ কোম্পানিগুলো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তবে এসব প্রকল্পের সবই যে সফল হয়েছে তা কিন্তু নয়। অনেক প্রকল্প শুরুতে কিংবা শেষদিকেও মুখ থুবড়ে পড়ে এসব কোম্পানি। বাদ যায়নি প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপলও। কোম্পানিটির আইফোন, আইপ্যাড, ম্যাকবুকের জন্য পরিচিত হলেও একাধিক নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু সফল হতে পারেনি। বলে রাখা ভালো, সর্বশেষ বিদ্যুৎচালিত গাড়ির বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করলেও সেটিতে ব্যর্থ হয় অ্যাপল।

কোন কোন প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে তার কিছু উদাহরণ তুলে ধরা হলো-

ম্যাজিক চার্জার

ম্যাজিক চার্জার:

আইফোনের জন্য ম্যাগসেফ চার্জার চালুর আগে অ্যাপল এয়ারপাওয়ার নিয়ে কাজ করেছে। তবে এটিই একমাত্র প্রকল্প নয়। ২০২২ সালের নভেম্বরে অ্যাপলের একটি চার্জারের ছবি টুইটারে প্রকাশ পায়। এ চার্জারের মাঝের অংশটি ওপরে ওঠানো যেত। দ্য ভার্জ প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, এটি দিয়ে শুধু আইফোন চার্জ দেয়া যেত।

অ্যাপল ইন্টারঅ্যাক্টিভ টেলিভিশন বক্স:

ম্যাকবুকের মতো টেলিভিশন তৈরিতে অ্যাপলের উদ্যোগ ততটা কার্যকর নয় বলে মনে করেন অনেকেই। তবে মার্কিন কোম্পানিটি দীর্ঘ সময় ধরে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করে আসছে এবং এর অন্যতম উদাহরণ অ্যাপল ইন্টারঅ্যাক্টিভ টেলিভিশন বক্স। ১৯৯০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে ইন্টারঅ্যাক্টিভ টেলিভিশন বক্সের পরীক্ষা শুরু করে অ্যাপল। ১৯৯৪ ও ১৯৯৫ সালে এ প্রকল্প বাতিল করে দেয়া হয়।

এয়ার পাওয়ার

এয়ার পাওয়ার:

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ওয়্যারলেস চার্জিং ম্যাট আনার ঘোষণা দিয়েছিল অ্যাপল। এয়ার পাওয়ার নামের এ ম্যাটে একইসঙ্গে আইফোন, অ্যাপল ওয়াচ ও এয়ারপড একত্রে চার্জ দেয়া যাবে এমন তথ্যও জানানো হয়েছিল। কিন্তু হার্ডওয়্যার-সংক্রান্ত সমস্যার কারণে কয়েকবার উন্মোচনের কথা বললেও ২০১৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রকল্প বন্ধ ঘোষণা করে।

পেনলাইট

পেনলাইট:

আইপ্যাডের জন্য প্রযুক্তি বাজারে অ্যাপল বেশ পরিচিত। তবে এর অনেক আগে থেকেই ট্যাবলেট তৈরির চেষ্টা চালিয়েছে কোম্পানিটি। পেনলাইট অ্যাপলের এমনই একটি পণ্য। ১৯৯২ সালে এর প্রটোটাইপ তৈরি করেছিল কোম্পানিটি। এতে একটি টাচস্ক্রিন দেয়া হয়েছিল, যেখানে পেনসিল ব্যবহার করে কাজ করা যেত। আইপ্যাডের গঠন হিসেবে এ ডিভাইসের ডিসপ্লে বেজ বেশ মোটা ছিল। ১৯৯৩ সালে এ প্রকল্প বন্ধ করে দেয়া হয়।

দ্য জোনাথন কম্পিউটার:

কম্পিউটারের বাজারে অ্যাপল ভালো জায়গা তৈরি করতে পেরেছে। কেননা কোম্পানিটি বছরের পর বছর বিভিন্ন প্রটোটাইপ নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছে। এর মধ্যে দ্য জোনাথন কম্পিউটার অন্যতম। এ ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেম বিভিন্ন উপায়ে আপডেট করা যেত। কিন্তু লাভজনক না হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে অ্যাপল এ প্রকল্প নিয়ে আর অগ্রসর হয়নি।

কপল্যান্ড

কপল্যান্ড:

অ্যাপলের সবচেয়ে জনপ্রিয় কিন্তু উন্মোচন না হওয়া সফটওয়্যার প্রকল্প হচ্ছে কপল্যান্ড। ম্যাক ওএস নিয়ে সমস্যা তৈরি হলে এটি নিয়ে কাজ শুরু করে অ্যাপল। এক বছরেরও বেশি সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কপলাইট প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি। ১৯৯৬ সালে গার্শউইন প্রকল্পের সঙ্গে এটিও বন্ধ করে দেয়া হয়।

দ্য ব্যাশফুল ট্যাবলেট:

উন্নত ট্যাবলেট ডিভাইস তৈরিতে অ্যাপলের আরও একটি প্রকল্প ব্যাশফুল। পেনলাইট ও নিউটন প্রকল্প শুরুর আগে এটি নিয়ে কাজ শুরু হয়। ১৯৮৩ সালে ফ্রগ ডিজাইন এ ডিভাইস তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে ২০১০ সালের আগে ট্যাবলেট ডিভাইসটির ডিজাইন প্রকাশ পায়নি বলে বিভিন্ন প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে।

অ্যাপল পালাদিন.

অ্যাপল পালাদিন:

১৯৯৮ সালে প্রথম আইম্যাক উন্মোচনের আগে অল-ইন-ওয়ান ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা চালায় অ্যাপল। এর মধ্যে অন্যতম অ্যাপল পালাদিন। ভোক্তার পরিবর্তে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে প্রাধান্য দিয়ে এ প্রটোটাইপ তৈরি করা হয়েছিল। এটি একইসঙ্গে কম্পিউটার, ফ্যাক্স মেশিন ও টেলিফোন হিসেবে কাজ করত। বাজারে আসার কথা থাকলেও এ প্রকল্পও বন্ধ করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি।

এভিএস