আধুনিক গাড়ির হেড লাইটের অতিরিক্ত উজ্জ্বলতায় ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে রাতে গাড়ি চালানো। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, ইউরোপে প্রতি চারজন চালকের মধ্যে একজন রাতের বেলায় গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকছেন আধুনিক গাড়ির হেড লাইটের অতিরিক্ত উজ্জ্বলতার কারণে।
আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর গাড়িগুলোর হেডলাইট এতটাই উজ্জ্বল যে তা চোখে সরাসরি পড়লে অস্বস্তি ও অন্ধত্বের মতো ঝুঁকি তৈরি করছে। বিশেষত এলইডি এবং বাই-জেনন আলোর তীব্র ঝলকানি বিপরীত দিক থেকে আসা চালকদের জন্য সাময়িক অন্ধত্বের কারণ হচ্ছে।
এলইডি লাইটগুলি সাধারণত ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার লুমেন পর্যন্ত উজ্জ্বলতা দেয় এবং একটি সাদা-নীল আলো উৎপন্ন করে। যা মানুষের চোখের জন্য বেশি সংবেদনশীল। অন্যদিকে বাই-জেনন হেডলাইটের উজ্জ্বলতা সাধারণত ৩৫ ওয়াট বাল্বের জন্য প্রায় ৩ হাজার ২০০ লুমেন পর্যন্ত হতে পারে। তবে, বিভিন্ন মডেল এবং ব্র্যান্ডের ওপর নির্ভর করে এর উজ্জ্বলতার পরিমাণ ভিন্ন হয়। যেখানে কিছু বাল্ব ২ হাজার থেকে ৪ হাজার লুমেনের মধ্যে থাকে।
আরও পড়ুন:
প্রথাগত হ্যালোজেন বাল্বের নরম, হলুদ আলোর বিপরীতে এলইডি আলো অনেক বেশি সাদা, উজ্জ্বল এবং কেন্দ্রীভূত হয়, যা সরাসরি চোখে আঘাত করে। এসইউভির মতো উঁচু গাড়ির হেডলাইটগুলো ছোট সেডান বা হ্যাচব্যাক গাড়ির চালকদের চোখের স্তরে সরাসরি আলো ফেলে, যার ফলে ঝলকানির সমস্যা আরও বাড়ে।
যুক্তরাজ্যে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ২৮০টি সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে হেডলাইটের ঝলকানিকে একটি সহায়ক কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যার মধ্যে বার্ষিক গড়ে প্রায় ছয়টি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এলইডি ও লেজার হেডলাইট প্রযুক্তি গাড়ির দৃশ্যমানতা বাড়ালেও বিপরীত দিকের গাড়িচালকদের জন্য তা অত্যন্ত বিরক্তিকর ও বিপজ্জনক। অনেক চালক জানিয়েছেন, রাতে ড্রাইভিং করার সময় সামনের গাড়ির হেডলাইটের তীব্র আলো চোখে লাগলে রাস্তা দেখা কঠিন হয়ে যায়, ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
বিভিন্ন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হেডলাইটের উজ্জ্বলতা নিয়ন্ত্রণে উন্নত সেন্সর প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা বললেও বাস্তবে এর কার্যকারিতা এখনো সীমিত। কিছু দেশে সরকার এ বিষয়ে নতুন বিধিনিষেধ আরোপের উদ্যোগ নিচ্ছে। যাতে গাড়ির আলো নির্দিষ্ট মানের বেশি উজ্জ্বল না হয়।





