পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে নিয়ে গবেষণা, অনুসন্ধান বা বিতর্ক চলছে বছরের পর বছর ধরে। সৌরজগতের বাইরের দূরবর্তী কোনো জায়গা থেকে প্রাণের অস্তিত্ব পাওয়া নিয়ে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। মহাবিশ্বের অন্য কোথাও মানবসদৃশ সভ্যতার সম্ভাবনার কথাও বলছেন তারা।
এবার নতুন এক যুগান্তকারী গবেষণায় ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী। তাদের দাবি, নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে সৌরজগতের বাইরে সম্ভাব্য প্রাণের উপস্থিতি শনাক্ত করতে পেরেছেন তারা। যেখানে ভিনগ্রহী প্রাণীর রাসায়নিক আঙুলের ছাপ পাওয়া গেছে। গ্রহটি বাসযোগ্যও হতে পারে বলে ধারণা তাদের।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিক্কু মধুসূদন বলেন, 'ভিনগ্রহে সম্ভাব্য জৈবিক কার্যকলাপের প্রমাণ পেয়েছি। যেখানে দুটি জৈব গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে গ্রহটি জীবাণুতে পরিপূর্ণ। এটি এখন পর্যন্ত জৈব অণুর অস্তিত্ব পাওয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ।'
'কেটু এইটিন বি' নামে গ্রহটির পর্যবেক্ষণে ডাইমিথাইল সালফাইড এবং ডাইমিথাইল ডাইসালফাইড নামে দুটি গ্যাস শনাক্ত করা হয়েছে। যেগুলোর দ্বারা শৈবালের মতো জীবাণু উৎপন্ন হয়। গবেষকরা বলেছেন গ্রহটি জীবাণুতে পরিপূর্ণ থাকার যথেষ্ট শক্তিশালী প্রমাণ।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিক্কু মধুসূদন বলেন, 'এটি বিশাল আবিষ্কার। তবে এ বিষয়ে আমাদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে। আমরা চাই এটি সত্যিই শক্তিশালী হয়ে উঠুক। যাতে আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে এটি আসলেই প্রাণের অস্তিত্ব আছে। শক্তিশালী একটি সংকেত পেতে আরও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।'
নতুন গ্রহটির আকার পৃথিবী থেকে ৮ দশমিক ৬ গুণ বড় এবং এর ব্যাস প্রায় ২ দশমিক ৬ গুণ বড়। যা পৃথিবী থেকে প্রায় ১২৪ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। যেখানে জীবনের মূল উপাদান তরল পানি ও গ্রহের পৃষ্ঠ থাকার সম্ভাবনা আছে। এর আগে 'কেটু এইটিন বি' গ্রহের বায়ুমণ্ডলে মিথেন ও কার্বন ডাই অক্সাইড শনাক্তের দাবি করেছিলেন বিজ্ঞানীরা।
১৯৯০ সাল থেকে সৌরজগতের বাইরে প্রায় ৫ হাজার ৮০০ গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে। বিজ্ঞান বা গবেষণার চূড়ান্ত লক্ষ্য হল সৌরজগতের বাইরে পৃথিবীর মতো একটি গ্রহের সন্ধান করা। হাজার হাজার বছর ধরে মহাবিশ্বে আমরা একা কিনা তা নিয়েও ভাবনার শেষ নেই। তা মাত্র এক দুই বছরের মধ্যেই তা জানা যেতে পারে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।