মঙ্গলবার রাত ৯ টার পর ঘণ্টাখানেকের জন্য ফেসবুকে লগইন করতে পারছিল না অধিকাংশ ব্যবহারকারী। এতে বড় ধস নামে ফেসবুকভিত্তিক ব্যবসায়।
শখের তোলা ৮০ টাকা নামে ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে ব্যবসা করেন মো. বিলাস। বিক্রি করেন বিড়াল-কুকুরের খাবারসহ নানা পণ্য। তবে হঠাৎ করে ফেসবুক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিক্রি নেমেছে অর্ধেকে।
তিনি বলেন, 'আমাদের রেগুলার যে ৫০ বা ৮০ শতাংশ অর্ডার থাকে সেখান থেকে অর্ধেকেরও কম নেমে গিয়েছে।'
অন্যদিকে ঈদের আগে অনলাইনে জামা কাপড়ের বিক্রি বাড়ছে প্রতিদিন। প্রতিষ্ঠানগুলো দিনে কয়েক হাজার ডলার বুস্ট করেন পণ্য বিক্রি করতে। তবে ফেসবুক কাজ না করলেও ডলার কেটে নিয়েছে ব্যবসায়ীদের।
অন্যদিকে ফেসবুকে ট্রাফিক কমায় ই-কমার্সভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলোর ট্রাফিকও কমেছে বেশ। আগে ওয়েবসাইটে দিনে কয়েক হাজার অর্ডার পেলেও ফেসবুকের সমস্যায় সেটা কমেছে।
এক ব্যবসায়ী জানান, 'প্রত্যেকটা অর্ডার আনতে কাস্টমারের জন্য ১ ডলারের বেশি খরচ করতে হয়। গতকাল রাত ৯ টার পরেই আমাদের অর্ডার বন্ধ হয়ে গেছে।'
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একঘণ্টা সময়ের জন্য ফেসবুক ক্ষতির সম্মুখীন প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার অর্থের। লম্বা সময় ধরে যারা এফ-কমার্স কেন্দ্রিক ব্যবসা করছেন তাদের অন্যান্য প্লাটফর্মের দিকেও নজর দিতে হবে। এতে কোন একটি প্ল্যাটফর্মে সমস্যা হলে অন্যটা দিয়ে হলেও ব্যবসা চালিয়ে নেয়া যাবে।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আরিফ মাঈনুদ্দিন বলেন, 'শুধুমাত্র ফেসবুক নির্ভর যারা বিজনেস করেন আমাদের দেশে। তারা বিভিন্নভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। কারণ তারা ফেসবুকে বিভিন্নভাবে বুস্টিং, প্রমোশন করে পণ্য বিক্রি করে। দীর্ঘমেয়াদী বিজনেসের জন্য শুধুমাত্র ফেসবুক নির্ভর না হয়ে এর বিকল্প কিছু ভাবতে পারেন।'
অন্যদিকে আরেক প্রযুক্তিবিদ শফিউল আলম বলছেন, দেশিয় সোশ্যাল প্লাটফর্মের দিকে মনোযোগী হতে হবে সরকারকে। লম্বা সময় ব্যবসার জন্য ওয়েবসাইট তৈরি থাকতে হবে। এতে এ ধরনের জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও দেশিয় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যবসা করা যাবে। বুস্টিং করে যারা ব্যবসা করছেন তাদের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ফেসবুক সেবা বাড়িয়ে দিতে পারে।
প্রতিদিন প্রায় কয়েকশ' থেকে কয়েক হাজার অর্ডার পরে এই এফ-কমার্স বিজেনেসে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের আশা ফেসবুকের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে হলে এই ধরণের সমস্যা আরও কমবে।