এমন বাস্তবতায় গ্রাহকের টাকা ফেরত এবং পুনরায় ব্যবসা চালুর বিষয়ে আইনগত সমাধান জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে পাওনা টাকা আটকে থাকা গ্রাহকদের দাবি, শুধু পেমেন্ট গেটওয়ের টাকা ফেরতই নয়, এর বাইরেও তাদের অনিষ্পন্ন ইস্যুগুলোর সমাধান করতে হবে।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ই-কমার্স খাতের জটিলতায় গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল একটি কারিগরি কমিটি গঠন করে। কমিটি সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট গেটওয়ে এবং ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে ধারাবাহিক বৈঠক করছে এবং সমাধানের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের কারিগরি কমিটির বৈঠকে জানানো হয়, বিভিন্ন পেমেন্ট গেটওয়েতে ৩৫টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের টাকা আটকে আছে। এর মধ্যে ১৫টি প্রতিষ্ঠান ৬৭ হাজার অর্ডারের বিপরীতে প্রায় ৪১১ কোটি টাকা গ্রাহকদের ফেরত দিয়েছে। তবে গ্রাহকদের কোনো টাকা ফেরত দেয়নি ই-অরেঞ্জ। প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকদের ৩৪ কোটি ৫৪ লাখ ৩৫ হাজার ৭৯১ টাকা পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে আছে।
প্রায় তিন বছর পর প্রথমবারের মতো ই-অরেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন মালিক সোনিয়া মেহজাবিনের পক্ষে আইনজীবী শামসুল হুদা প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা জটিলতার বিষয়টি উল্লেখ করে জানান, ই-অরেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা সোনিয়া মেহজাবিন ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে চুক্তিনামা করে জনৈকা বিথী আক্তারের কাছে ই-অরেঞ্জের মালিকানা হস্তান্তর করেন।
বিথী আক্তার বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা দাবি করছেন না। অন্যদিকে সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান কারাগারে আটক রয়েছেন। ই-অরেঞ্জের মালিকানা সংক্রান্ত বিষয়টি আইনগতভাবে নিষ্পত্তির বিষয়ে সোনিয়া মেহজাবিনের পক্ষে সম্প্রতি তার আইনজীবী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়, ই-অরেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া মেহজাবিন ২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে আর মালিক নন।
এ বিষয়ে সোনিয়া মেহজাবিন ও মাসুকুর রহমানের পক্ষে আইনজীবী শামসুল হুদা বলেন, 'ই-অরেঞ্জের সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ এখন সোনিয়া মেহজাবিনের হাতে নেই। এর নিয়ন্ত্রণ বীথি আক্তারের কাছে। কিন্তু বীথি আক্তার বর্তমানে পলাতক এবং মালিকানা দাবি করছেন না।'
জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের সভায় সার্ভার বিষয়ক আলোচনায় কোনো সমাধান আসেনি। অথচ সার্ভারে গ্রাহকের সব তথ্য রয়েছে। সার্ভার অতি দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হেফাজতে নেয়ার সুপারিশ করা হয়।
এদিকে মালিকানা জটিলতার অবসান হলে গ্রাহকদের পেমেন্ট গেটওয়ের টাকা দেয়া যাবে বলে জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।