অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে এবং শরণার্থীদের আশ্রয় আবেদন কমাতে এবার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাজ্য। এর ফলে কপাল পুড়তে পারে হাজার হাজার শরণার্থীর।
নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী আশ্রয় পাওয়া অ্যাসাইলাম প্রার্থীদের স্থায়ীভাবে নাগরিকত্ব পেতে অপেক্ষা করতে হবে ২০ বছর, যা আগে ছিল মাত্র পাঁচ বছর। গতকাল (সোমবার, ১৭ নভেম্বর) এ পরিকল্পনা ঘোষণা করে দেশটির সরকার।
অভিবাসন বিষয়ক আইনজীবী এমডি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ফ্যামিলি রিনিউয়ারও কঠিন করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ফ্যামিলি রিনিউয়ার হবে অন্য ব্রিটিশ বা অন্য ওয়ার্ক পারমিট হোল্ডারদের মতোই। মানে ইজি রুট আর থাকছে না। যেটা আগে ফ্রি ছিল। আপনি বেনিফিট সিস্টেমে অ্যাসাইলেম থাকা বা যারা রিফিউজি তারা যেন শুধু সরকারের ওপর নির্ভর না করে, সেটাকেও তারা এখন কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে। শুধু নতুন আবেদনকারীদের ওপর এটা হবে।’
সরকারের নতুন পরিকল্পনায় ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের কঠোর নীতিতে প্রবাসী কমিউনিটিতে মারাত্মক প্রভাব পড়বে।
আরও পড়ুন:
এমডি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের যারা বাংলাদেশি স্টুডেন্ট অ্যাসাইলেম সিকার, ওয়ার্ক পারমিট বা ভিজিট ভিসায় অ্যাসাইলেম সিকার, সবাই এটা ভুক্তভোগী হবে ভবিষ্যতে। বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে তার আসলেই লাইফ রিস্ক আছে, সে স্টুডেন্ট হওয়ার কারণে বা নতুন পলিসির কারণে তাকে ২০ বছরের রুটে অ্যাসাইলেম থাকতে হবে।’
অভিবাসন ব্যবস্থায় ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে কঠোর ডেনমার্ককে অনুসরণ করে যুক্তরাজ্যের নতুন এই নীতি। সরকারের এমন পদক্ষেপে আতংকিত এসাইলাম প্রত্যাশীরা।
তাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এ দেশের নিজস্ব পলিটিক্যাল কারণে, পলিটিক্যাল পার্টিগুলো তাদের ভোটের স্বার্থটাকে প্রাধান্য দিয়ে যখন এ বিষয়টা অ্যাসাইলামদের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে তখন সেটা দুঃখজনক।’
সরকারি তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের জন্য চলতি বছর রেকর্ডসংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে। এ বছর জুন পর্যন্ত ছয় মাসে প্রায় এক লাখ ১১ হাজার আবেদন জমা পড়েছে।
গেল বছরের জুলাইয়ে কিয়ার স্টারমার দায়িত্ব নেয়ার পর মোট ৫০ হাজার আশ্রয়প্রার্থী সাগর পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, অনিয়মিত অভিবাসীর আগমন ২৭ ভাগ বেড়েছে। অবৈধ পথে আসা অভিবাসীদের ৮৮ ভাগই চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছান। বর্তমানে এরকম প্রায় ৩২ হাজার আশ্রয়প্রার্থী হোটেলে আছেন, আর ঝুলে আছে প্রায় ৫১ হাজার সংশ্লিষ্ট সংশ্লিষ্ট মামলার রায়।





