পারস্য উপসাগরের উপকূলে ১১ হাজার ৫৭১ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দেশ কাতার। দেশটির নির্মাণ খাতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের যেমন অবদান আছে তেমনি মসজিদগুলোতেও রয়েছে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খতিবের বিপুল চাহিদা।
১৯৯০ সালে প্রথম সরকারিভাবে বিদেশ থেকে ইমাম-মুয়াজ্জিন নিয়োগ দিতে শুরু করে কাতার। প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে রাজধানী দোহাসহ বিভিন্ন শহরের মসজিদে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশিরা।
কাতারের প্রায় ২ হাজার ৪০০ মসজিদে দায়িত্ব পালন করছেন প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন। মুসলিম রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশি আলেমদের কদর করেন কাতারিরা।
প্রবাসী বাংলাদেশি ইমামদের মধ্যে একজন বলেন, 'বাংলাদেশে গিয়ে ওনারা হাজার হাজার মানুষের মধ্যে থেকে বাছাই করে এখানে নিয়ে আসেন। এই সুযোগটা অন্য কোনো দেশে তারা পান না।'
বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকা বেতনের পাশাপাশি কাতার সরকারের উদ্যোগে বিনামূল্যে আবাসন সুবিধা পান তারা। গুনতে হয় না পানি বা বিদ্যুৎ বিলও। এছাড়া তাদের সন্তানদের পড়াশোনার খরচও বহন করে সরকার।
আরেকজন ইমাম বলেন, 'কাতারের সরকার এবং জনগণের আমাদের প্রতি যে বিশ্বাস এবং ভালোবাসা সেটা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।'
কাতার সরকার যেভাবে সুযোগ দিচ্ছে, পৃথিবীর আর কোথাও এই নজির নেই বলে জানান আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, 'এখানকার আলেমগণের প্রতি আমার উদাত্ত আহ্বান, তারা যেন এখানে অবস্থানরত প্রবাসী ভাইদের সময় দেন, তাদেরকে ধর্মীয় কাজের অনুপ্রেরনা যোগান এবং সহযোগিতা করেন।'
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনে করেন, দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ধর্মীয় মূল্যবোধ তুলে ধরে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠতে পারেন প্রবাসী আলেমগণ।
কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম বলেন, 'বাংলাদেশি খতিব, মুয়াজ্জিন এবং ইমামরা তাদের মেধা এবং পরিশ্রম দিয়ে এই স্থান অর্জন করেছেন।'
স্থানীয়রা মনে করেন, মেধা, আচরণ, শ্রুতিমধুর তিলাওয়াত, শুদ্ধ উচ্চারণসহ নানাবিধ সাফল্যের কারণে বাংলাদেশি আলেমদের ব্যাপক কদর রয়েছে কাতারে।