লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৩ শতাংশই বাংলাদেশি। স্থানীয় রাজনীতিও বাংলেদেশিদের দখলে। তবুও কালের পরিক্রমায় এখানে থাকা বিপুল সংখ্যক বাংলা স্কুল এখন বন্ধ। ৪০টির বেশি বাংলা স্কুলের জন্য থাকা ৬ লাখ পাউন্ডের ব্রিটিশ বরাদ্দও থমকে আছে। এতে হুমকির মুখে দেশটিতে থাকা বাংলাদেশি শিশুদের বাংলা ভাষা আর সংস্কৃতি চর্চা।
গবেষণা তথ্য বলছে, একদম প্রথম যেসব বাংলাদেশি ব্রিটেনে পাড়ি জমিয়েছিলেন, তাদের বর্তমান প্রজন্মের কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলা ভাষা। তবে নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলা ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে রীতিমতো যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে অনেক বাংলাদেশি সংগঠন। যাদের প্রতিষ্ঠিত স্কুলে আগ্রহ নিয়ে বাংলা শিখতে আসছে শিশুরা।
লন্ডন বাংলা স্কুলের উদ্যোক্তা আনোয়ার শাহজাহান বলেন, 'তারা যদি বাংলা শিখে এবং বাংলায় কথা বলতে পারে তাহলে বাংলাদেশের প্রতি তাদের আগ্রহ ও আন্তরিকতা বাড়বে।'
বাংলাদেশের সাথে শিকড়ের সম্পর্ক আর বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে শিশুদের সাথে মাতৃভাষার ব্যবহারে বাড়নো জরুরি বলে মনে করছেন অনেকেই।
ব্রিটেনের প্রবাসী গণমাধ্যমকর্মী হাসান রহমান বলেন, 'বাংলা ভাষা শেখানোর জন্য বিভিন্নভাবে ছোট ছোট বাংলা স্কুল এবং কাউন্সিলের কিছু কিছু বাংলা লার্নিং প্রোগ্রাম আছে সেগুলো থেকে আশা করছি নতুন প্রজন্ম বাংলা ভাষা শিখতে পারবে।'
এদিকে বাঙালিদের দাবি অনুযায়ী, দীর্ঘ সময় বাংলা স্কুল কার্যক্রমের জন্য আংশিক বরাদ্দ দেয়ার পথে এগুচ্ছে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল।
সেখানকার কাউন্সিলর ওহিদ আহমেদ বলেন, 'প্রায় দুইবছর হয়ে গেছে আমাদের ফান্ডিং। আশা করছি আবার বাংলা লার্নিং চালু হবে।'
একটি সংস্কৃতি বেঁচে থাকে ভাষার মাঝে। ভাষা একটি জাতি গোষ্ঠীর স্বতন্ত্র পরিচয়। তাই ভাষার মধ্য দিয়েই নতুন প্রজন্মের কাছে একটি সংস্কৃতিকে তুলে ধরা যায়। প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্ম থেকে যদি বাংলা ভাষা হারিয়ে যায় তাহলে এক সময় তাদের কাছ থেকে হারিয়ে যেতে পারে বাঙালি সংস্কৃতিও।