ঘরোয়া পদ্ধতিতে হেয়ার স্পা
চুলের যত্ন নিতে অলিভ অয়েল, নারিকেল তেল, বাদাম তেল, ঘি, ডিম, কলা, মধু, দুধ ও টক দই-এর মতো প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে এ স্পা ট্রিটমেন্ট করা যায়।
১. তেল মালিশ:
প্রথমেই চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত উষ্ণ তেলের মিশ্রণ দিয়ে ম্যাসাজ করতে হবে। অলিভ অয়েল, নারিকেল তেল, ঘি এবং বাদাম তেল একসঙ্গে মিশিয়ে হালকা গরম করে নিন। বাদাম তেল না থাকলে শুধু নারিকেল তেল ও অলিভ অয়েলও ব্যবহার করা যেতে পারে। এ উষ্ণ মিশ্রণটি আঙুল অথবা তুলার সাহায্যে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগান। উষ্ণ তেল রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে ও চুলের পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন:
২. স্টিম বা ভাপ:
তেল লাগানোর পর উষ্ণতা বা স্টিম দেওয়া জরুরি। একটি তোয়ালে হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে ভালোভাবে চিপে নিন। এরপর তোয়ালেটি দিয়ে মাথা ভালো করে পেঁচিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রাখুন। এ ভাপ তেলের পুষ্টি উপাদানকে চুলের গভীরে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।
৩. শ্যাম্পু ও পরিষ্কার:
এবার হালকা গরম পানি ও শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন। সরাসরি শ্যাম্পু না দিয়ে পানিতে গুলে ব্যবহার করলে ফেনা বেশি হয়। অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করবেন না, কারণ এতে চুল পড়ার ঝুঁকি বাড়ে।
আরও পড়ুন:
৪. কন্ডিশনার ব্যবহার:
শ্যাম্পুর পর চুল নরম ও সিল্কি করতে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, কন্ডিশনার যেন চুলের গোড়ায় না লাগে। কারণ এতে চুলের গোড়া নরম হয়ে চুল ঝরে যেতে পারে। বাড়িতে কন্ডিশনার বানাতে চাইলে চা পাতা সেদ্ধ করে ঠাণ্ডা করে তাতে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
৫. হেয়ার মাস্ক প্রয়োগ:
স্পা-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো হেয়ার মাস্ক। আপনি বাজার থেকে মাস্ক কিনতে পারেন অথবা ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন। কিছু ঘরোয়া হেয়ার মাস্ক হলো-
(১) ডিম ও তেলের মাস্ক: চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী ১-২টি ডিমের সাথে নারিকেল তেল মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করুন। এটি চুলে লাগিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট উষ্ণ তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখুন, তারপর শ্যাম্পু করে নিন।
(২) কলার মাস্ক: পাকা কলা চটকে তার সাথে ডিম, অলিভ অয়েল, মধু ও দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ২০ মিনিট মাথায় রেখে ধুয়ে ফেলুন।
আরও পড়ুন:
(৩) টক দইয়ের মাস্ক: কলা, মধু, টক দই ও অলিভ অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করুন এবং ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে নিন।
চুল হেয়ার স্পা করার কী কী উপকারিতা রয়েছে?
নিয়মিত হেয়ার স্পা ট্রিটমেন্ট চুলের গভীরে পুষ্টি যোগায়, রুক্ষতা ও জট দূর করে এবং চুলকে নরম, সিল্কি ও উজ্জ্বল করে তোলে। এটি স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুল পড়া কমাতে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এছাড়া, খুশকি ও স্ক্যাল্পের অন্যান্য সমস্যা সমাধানেও এটি কার্যকর।
হেয়ার স্পা করলে কি চুল সোজা হয়?
হেয়ার স্পা ট্রিটমেন্ট চুল স্থায়ীভাবে সোজা করে না, তবে এটি চুলের রুক্ষতা ও জট কমিয়ে গভীরভাবে ময়েশ্চারাইজ করার কারণে চুল সাময়িকভাবে মসৃণ ও সোজা দেখাতে পারে।
আরও পড়ুন:
হেয়ার স্পা কতদিন পর পর করতে হয়? রিবন্ডিং চুলের যত্নে হেয়ার স্পা-
সাধারণত প্রতি ৩ থেকে ৪ সপ্তাহে একবার হেয়ার স্পা করা উচিত। চুল যদি অতিরিক্ত রুক্ষ বা রাসায়নিক ট্রিটমেন্টের (যেমন রং করা) কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে মাসে একবার বা দুইবারও স্পা করা যেতে পারে। তবে রিবন্ডিং-এর ক্ষেত্রে অন্তত ছয় মাস পর হেয়ার স্পা করা ভালো।
পার্লারে হেয়ার স্পা খরচ
চুলের দৈর্ঘ্য ও স্পা-এর ধরণের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশে পার্লারে হেয়ার স্পা-এর খরচ সাধারণত ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা বা তার বেশি হতে পারে। তবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে এ খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
আরও পড়ুন:





