ঢাকায় শীত পড়বে দেরিতে, ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে বাড়বে ঠাণ্ডার প্রভাব

শীতের সকালে খেজুরের রস নিয়ে যাচ্ছেন কৃষক
শীতের সকালে খেজুরের রস নিয়ে যাচ্ছেন কৃষক | ছবি: সংগৃহীত
0

চলতি বছরও রাজধানী ঢাকায় শীতের আগমন দেরি হতে পারে। গত বছরের নভেম্বর মাসে সারাদেশে হাড় কাঁপানো শীত থাকলেও ঢাকায় তেমন তাপমাত্রার হ্রাস লক্ষ্য করা যায়নি। এবারও রাজধানীতে নভেম্বরজুড়ে তেমন শীতের প্রভাব দেখা যাবে না বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক।

গতকাল (রোববার, ২৬ অক্টোবর) রাতে তিনি বলেন, ‘চলতি বছর ঢাকায় শীত শুরু হতে পারে নভেম্বরের শেষের দিকে অথবা ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে। তবে এরইমধ্যে উত্তরাঞ্চলে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে।’

আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক আরও জানান, দিনের তাপমাত্রা যখন ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসে, তখন হালকা ঠাণ্ডা অনুভূত হতে শুরু করে। রোববার সারা দেশের মধ্যে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের অনেক জেলায় তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমছে এবং সেখানে সকালে শিশির পড়তে দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে উত্তরাঞ্চলে পুরোদমে শীত শুরু হতে পারে; বিশেষ করে রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলায়। পরে ধাপে ধাপে শীত দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে। রাজধানী ঢাকায় শীত শুরু হতে পারে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে।’

ঢাকায় দেরিতে শীতের আগমন সম্পর্কে একেএম নাজমুল হক বলেন, ‘এবার বঙ্গোপসাগরে ঘন ঘন সিস্টেম সৃষ্টির কারণে পরিবেশের অবস্থা টালমাটাল, ফলে সহজে তাপমাত্রা কমছে না। রাজধানীতে ঘনবসতি, ঘরবাড়ি, যানবাহন ও পরিবেশের ভারসাম্য নেই। যেখানে ৫০–৬০ লাখ লোক থাকার কথা সেখানে তিন কোটিরও বেশি লোক বসবাস করছে। ফলে অন্যান্য এলাকার তুলনায় ঢাকার তাপমাত্রা প্রায় ২–৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকে।’

তিনি আরও জানান, টাঙ্গাইল ও গাজীপুর থেকে ঢাকার তাপমাত্রা সবসময় তিন ডিগ্রি বেশি থাকে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, চলতি বছর শীত স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা দীর্ঘ ও শীতল হতে পারে। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা ৮–১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সকালের দিকে ঘন কুয়াশা এবং হালকা শিশির পড়া স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।

আবহাওয়াবিদদের ধারণা, ঘূর্ণিঝড় মন্থার প্রভাবে দেশের উত্তর-পশ্চিম ও উপকূলীয় এলাকায় ২–৩ দিন বৃষ্টি কমার পর ধীরে ধীরে তাপমাত্রা কমে শীতের আমেজ শুরু হতে পারে। মন্থার প্রভাবে আগামী মঙ্গলবার হালকা বৃষ্টি শুরু হলেও বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টি থাকতে পারে। এরপর আবহাওয়া তার স্বাভাবিক গতিতে ফিরে আসবে।

এফএস