দেশে এখন
পরিবেশ ও জলবায়ু
0

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ভূমি হারিয়ে নিঃস্ব অন্তত দুই হাজার বাসিন্দা

নরসিংদীর রায়পুরার মেঘনা নদীতে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। মানা হচ্ছে না ইজারার শর্ত। এ কারণে চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে ভাঙন। গেল ৫ বছরে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত দেড় হাজার বিঘা কৃষি জমি। কর্মহীন হয়েছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ আর ভূমি হারিয়ে নিঃস্ব অন্তত ২ হাজার বাসিন্দা।

রায়পুরার চানপুর এলাকার বাসিন্দা মতি মিয়া। মেঘনা নদীর ভাঙনে সহায় সম্বল হারিয়ে হয়েছেন নিঃস্ব। দিনমজুর মতি মিয়া বলেন, ‘আমার বাড়ি-ঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। কারে বলবো, নেতারা বালি মাটি কেটে নিচ্ছে।’

প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে রায়পুরায় মেঘনা নদীতে দেখা দেয় ভাঙন। নদীগর্ভে বিলীন হয় শত শত ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। নদী ভাঙনের কারণ হিসেবে যত্রতত্র অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনকে চিহ্নিত করা হয়েছে একাধিকবার। তবে, গত ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে এই কর্মযজ্ঞ।

চলতি বছর সাড়ে ১৪ কোটি টাকায় ১ বছরের জন্য রায়পুরার কালাৎচর বালু মহালটি ইজারা নেয় মেসার্স হাজী আশরাফ হোসেন সরকার ট্রেডার্স। অভিযোগ রয়েছে, নিয়ম ভেঙে নদীর বেশ কয়েকটি স্থানে সাব লিজের মাধ্যমে অবৈধ বালু উত্তোলন করছে প্রতিষ্ঠানটি। ফলে নদী তীরবর্তী আব্দুল্লাহরচর, মাঝেরচর, সাহেরখোলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা রয়েছে ভাঙন আতঙ্কে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দৈনিক হাজার হাজার ফুট বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসীদের একজন বলেন, ‘বালু উত্তোলন করার ফলে নদী ভেঙ্গে যাচ্ছে। চারদিক দিয়ে নদী। এখানকার ২০ হাজার মানুষ কোথায় গিয়ে বাস করবে।’

সংবাদ সংগ্রহে গেলে নদীতে সাংবাদিক দেখেই তেড়ে আসে বালু মহাল কর্তৃপক্ষ। তবে চৌম্বক ড্রেজারে নিয়ম বহির্ভুত এবং রাতের আঁধারে বালু উত্তোলনের বিষয়ে স্বীকার করেছেন ইজারাদার।

নরসিংদী রায়পুরার কাৎলারচর বালু মহালের ইজারাদার আশরাফ হোসেন সরকার বলেন, ‘রাতের আঁধারে মাঝখানে কিছুদিন বালু উত্তোলন করা হয়েছিল।’

জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম বলেন, নিয়ম ভঙ্গ করলে বাতিল করা হবে ইজারা। জানান, ‘তদন্ত কার্যক্রমের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে। যদি প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে ইজারা বাতিল করা হবে। ‘

কাৎলারচর বালু মহালে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হয়। ২টাকা ৪০ পয়সা হিসেবে যার বাজার মূল্য প্রায় অর্ধ কোটি টাকা।

tech