মাত্র ৩৬ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট। যার আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। যেখানে রাজস্ব লক্ষ্য ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। আর বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিতে হবে দেশ-বিদেশ থেকে। এর মধ্যে দেশের আর্থিক খাত থেকে নেয়া হবে দেড় লাখ কোটি টাকার বেশি।
ঘাটতি পূরণে গত কয়েক অর্থবছরে ব্যাংক থেকে বেশি বেশি ঋণ নিচ্ছে সরকার। এতে বেসরকারি খাত ঋণ পাচ্ছে কম। আবার কোনো অর্থবছরেই রাজস্ব লক্ষ্য পুরোটা অর্জন করতে পারছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে ঘাটতি পূরণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ঋণ নিতে হতে পারে সরকারকে। আর এতে দেশের আর্থিক খাতে আরও চাপ বাড়বে।
অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারকে ঋণ নিতেই হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ব্যাংকিং খাত তো সবল নয়। সরকার যদি ৮০ শতাংশ ঋণ নিয়ে নেয় তাহলে সেই দেশ কিন্তু চলতে পারবে না। তাই বাজেট থেকে আরও ৫০ হাজার কোটি টাকা ছেঁটে ফেলা উচিত।'
আলোচনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ডলারের বিপরীতে টাকার চাহিদা বাড়ানো এবং বেশি সুদে বিদেশ থেকে ব্যাংকগুলোকে ঋণ নেয়ার পরামর্শ দেন তারা।
প্রস্তাবিত বাজেটে কাঠামোগত সংস্কারের বিষয়গুলো তেমনভাবে আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা। তাগিদ দেয়া হয় ব্যাংকিং, করনীতি ও প্রশাসনের মৌলিক সংস্কারে।
অপরদিকে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনীতি সংকট দূর করতে বাজেটে অন্তত ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় কমানোর পরামর্শ দেন অর্থনীতিবিদরা। সেই সাথে দুর্বল ব্যাংককে বারবার তারল্য যোগান না দেয়া এবং একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেন আলোচকরা।
আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, 'দুর্বল ব্যাংকগুলোকে রক্ষা করতে গিয়ে অর্থনীতিটাকে ধ্বংস করা ঠিক হবে না। ব্যাংকিং খাতে সংস্কার খুবই দীর্ঘমেয়াদি। এজন্য সরকার এ খাতকে বড় করতে পারছে না।'
ব্যাংকসহ আর্থিকখাতে সংস্কার ও খেলাপিঋণ নিয়ন্ত্রণে না এলে অর্থনীতি চাপমুক্ত না হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে অনেকের।