বিনামূল্যের পাঠ্যবই: প্রাথমিক এগোলেও পিছিয়ে মাধ্যমিক

শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছনো নিয়ে শঙ্কা

চলছে পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ
চলছে পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ | ছবি: এখন টিভি
4

২০২৬ সালের বিনামূল্যের পাঠ্যবই প্রস্তুত হচ্ছে। প্রাথমিকের ৯০ শতাংশ বই ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে গেলেও, মাধ্যমিকের বই রয়ে গেছে প্রেসেই। ৭০ শতাংশের বেশি বই এখনও প্রস্তুত হয়নি। জানুয়ারির মধ্যে এসব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছনো নিয়ে শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। অনেকের অভিযোগ, কোনো কোনো প্রেস মালিক শেষ সময়ে নিম্নমানের বই দিতে খুঁজছেন নানান ফাঁকফোকর। কিন্তু এনসিটিবি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

চলতি বছর সারাদেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৪ কোটি ৩৬ লাখ ৭৫ হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে ৩০ কোটি ২ লাখ ৫৫ হাজার ১৫৪টি বই বিতরণের লক্ষ্য সরকারের। যেখানে বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।

এনসিটিবি বলছে, প্রাথমিকের প্রায় সব বই ছাপানো হয়েছে, নভেম্বর পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে গেছে ৯০ শতাংশ। কিন্তু মাধ্যমিকের ৭০ শতাংশ বই এখনো ছাপানোই হয়নি।

রি টেন্ডারের কারণে মাধ্যমিকের কাজ শুরু করতে যেমন একদিকে দেরি হয়েছে, অন্যদিকে অনেক প্রেসের মালিক অসদুপায়ে ফাঁক ফোঁকর খুঁজছে বলে অভিযোগ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতির। জানুয়ারিতে মাধ্যমিকের বই মাঠ পর্যায়ে পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা তার।

বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের কিছু লোক আছে তারা বসে আছে, শেষ সময়ে খারাপ কাগজে বই দেয়ার জন্য। কিছু লোক আছে ইনস্পেকশন টিমকে প্রভাবিত করছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে।’

তিনি বলেন, ‘ইন্সেপশন টিম যারা মাঠ পর্যায়ে তদারকি করে, এনসিটিবি বলেন মন্ত্রণালয় বলেন ওদের অভিজ্ঞতা ও স্বচ্ছতা না থাকলে আমাদের এসব লোক খারাপ হওয়ার সুযোগ পাবে। আমরা সমষ্টিগতভাবে এদের প্রশ্রয় দিতে চাই না।’

এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বক্তব্য জানতে চাইলে কর্মকর্তারা অপারগতা প্রকাশ করে।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীরা বই না পেলে তৈরি হবে শিখন ঘাটতি। এ পরিস্থিতির জন্য পরিকল্পনার অভাবকে দায়ী করছেন এ শিক্ষাবিদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, পুরো সিস্টেমটা একটু চেক করা দরকার। কারণ শুধু মন্ত্রণালয়ের টেন্ডারিং প্রক্রিয়া না, অনেক ক্ষেত্রে ডিসিশন মেকিংয়ের ক্ষেত্রে যে মিটিংগুলো হওয়ার দরকার বা ফাইল পড়ে থাকার মতো অনেক কিছু শোনা যায়।’

গতবারের চেয়ে এবার বইয়ের কাগজের উজ্জ্বলতা এবং জিএসএম দুটোই বাড়ানো হয়েছে। এবার কাগজের জিএসএম প্রাথমিকে ৮০ এবং মাধ্যমিক ৭০। আর উজ্জ্বলতা ৮৫ শতাংশ।

এএইচ