সমুদ্রের উত্তাল জলরাশি কিংবা পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের টানে মন্ত্রমুগ্ধের মতো। ছুটির দিন হলে তাই লাখো দর্শনার্থীর ঢল নামে সমুদ্র নগরী কক্সবাজারে।
সড়কপথে পর্যটকের চাপ কমাতে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর ঢাকা-কক্সবাজার রুটে প্রথমবারের মতো ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ঢাকা থেকে দুটি ও চট্টগ্রাম থেকে বিশেষ একটি ট্রেন চালিয়ে এক বছরে নতুন এই রুটে রেলওয়ের গড় আয় ৮০ কোটি টাকারও বেশি। যা এরই মধ্যে রেলওয়ের সবচেয়ে লাভজনক ও জনপ্রিয় রুটের স্বীকৃতি পেয়েছে।
চাহিদা বাড়তে থাকায় চট্টগ্রাম থেকে স্থায়ীভাবে চালু হচ্ছে প্রবাল ও সৈকত নামে নতুন আরো দুটি ট্রেন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যাতায়াত শুরু করবে ট্রেন দুটি। এতে মাত্র ৪ ঘণ্টায় যাওয়া যাবে কক্সবাজার। পর্যটকদের সুবিধার জন্য ট্রেনে থাকছে খাবারের বগিও।
বাংলাদেশের রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. সুবক্তগীন বলেন, ‘গত ১ বছর ধরে আমরা ঢাকা থেকে আন্তঃনগর ট্রেন সেবা দিয়ে আসছিলাম। চাহিদা বাড়তে থাকায় চট্টগ্রাম থেকে স্থায়ীভাবে চালু হচ্ছে প্রবাল ও সৈকত নামে নতুন ট্রেন দুটি দুবার যাবে আর দুইবার আসবে অর্থাৎ চারটি ট্রেন যোগ হচ্ছে।’
রেলওয়ে সূত্র জানায়, নতুন ট্রেন দুটির প্রতিটিতে ১৬টি বগি ও ৭৪৩টি আসন থাকবে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত না হলেও ট্রেনে কেবিন, শোভন ও প্রথম শ্রেণির এই তিন ধরনের টিকিটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আগামীতে সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের আরও কিছু রুটের ট্রেন কক্সবাজারের সাথে যুক্ত হবে বলে আশা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের।
কক্সবাজার স্টেশন মাস্টার মো. গোলাম রব্বানী বলেন, ‘যে ট্রেনগুলো চট্টগ্রাম পর্যন্ত আন্তঃনগর হিসেবে আসে তা কক্সবাজার পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে।’
কক্সবাজারমুখী যাতায়াতের বাহন হিসেবে পর্যটকদের প্রথম পছন্দ ট্রেন। এ কারণে ট্রেনের টিকিটের চাহিদাও থাকে তুঙ্গে। অনলাইনে সার্ভার চালুর পর মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায় সব টিকিট। তাই নতুন ট্রেন চালুর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে পর্যটকরা।
পর্যটকদের একজন বলেন, ‘দুইটা ট্রেন যুক্ত হচ্ছে এইটা খুবই আনন্দের বিষয়।’
আরেকজন বলেন, ‘নতুন ট্রেন থাকা দরকার। কারণ এইটাতে এতো বেশি চাপ থাকে টিকেট পাওয়া কষ্ট হয়ে যায়।’
নতুন ট্রেন দুটির একটি সকাল সোয়া ছয়টায় ও অন্যটি বিকেল তিনটা ১০ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে যাত্রা করবে। ফিরতি পথে কক্সবাজার স্টেশন থেকে ছাড়বে সকাল ১০টা ২০ মিনিট ও রাত আটটায়। যাত্রাপথে ষোলশহর, জানালীহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামু স্টেশনে থামবে ট্রেন দুটি।