৪ হাজার শ্রমিক ও ১৫০ প্রকৌশলীর ৪ বছরের দিনরাত শ্রমে নগরের মানচিত্রে এখন প্রাণ সঞ্চার করছে ১৬ কিলোমিটারের সুদীর্ঘ উড়ালপথ। দেশিয় কারিগরি দক্ষতা ও কাঁচামালে তৈরি ৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকার এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চট্টগ্রামের যাতায়াতের ব্যবস্থায় নতুন এক মাইলফলক।
উদ্বোধনের ১৩ মাস পর এবার বাণিজ্যিকভাবে যান চলাচল শুরু হয়েছে নগরের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে। পতেঙ্গা প্রান্তে বসেছে অত্যাধুনিক চারটি টোল মেশিন। যেগুলোতে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে আজ থেকে প্রবেশ করছে যান। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামে নতুন করে এই এক্সপ্রেসওয়ের নামকরণের ঘোষণা দেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা শাহাদাত বরণ করেছেন তাদের জন্য বিভিন্ন জায়গা স্মৃতিচিহ্ন তৈরি করার চেষ্টা করছি, যেন সারা দেশের মানুষ ও নতুন প্রজন্ম জানতে পারে।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘প্রতিটি জায়গায় যদি আমরা তাদেরকে স্মরণ রাখতে পারি তাহলে নতুন প্রজন্ম আমাদেরকে মনে রাখবে যে কিছু একটা করে যেতে পারছি।’
টোল আদায় কার্যক্রম শুরুর পরপরই উপদেষ্টা, মেয়র, ও সিডিএ কর্মকর্তাদের গাড়ি বহর প্রথম টোল দিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশ করে। এরপরই টোল দিয়ে প্লাজা পার হয় সাধারণ যান।
চালকদের একজন বলেন, ‘আগে তো যানজট থাকতো এখন এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে গেলে ৩০ মিনিটে যাওয়া যাবে।’ আরেকজন বলেন, ‘আসা যাওয়া ২০০ টাকা দিতে হয় এইটা আমাদের জন্য সুবিধা আরকি।’
নতুন এই পথে আপাতত টোল আদায় করবে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান- সিডিএ। এক্ষেত্রে মোটরসাইকেল ও ট্রেইলার ছাড়া চলতে পারবে ১০ ধরনের যান। আপাতত নগদে ও পর্যায়ক্রমে অ্যাপস ও কার্ডে দেয়া যাবে টোল।
সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম বলেন, ‘ঢাকা এক্সপ্রেসওয়েতে যে টোল দেয়া হয় তার থেকে এখানে কম। এটার দৈর্ঘ্য আরো বেশি।’
ফ্লাইওভারে দুর্ঘটনা রোধে পর্যাপ্ত আলোকায়নের পাশাপাশি বাকগুলোতে রাখা হয়েছে স্পিডব্রেকার। এর সাথে শিগগিরই সংযুক্ত হবে ১০ টি স্পিড ক্যামেরা।
ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মনির হোসেন বলেন, ‘এটা ইলেকট্রনিক সিস্টেম, এখানে কেউ ফাঁকি দিতে পারবে না।’
কর্তৃপক্ষ জানায়, এই টোল প্লাজা সরিয়ে পরবর্তীতে স্থাপন করা হবে বিভিন্ন র্যাম্পের মুখে। ৯টি র্যাম্পের মধ্যে শিগগিরই চালু হবে নিমতলার অংশটি।