পরিষেবা
অর্থনীতি
0

চট্টগ্রাম বন্দরের প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগ হবে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে: এম সাখাওয়াত

আগামীতে চট্টগ্রাম বন্দরের কোনো প্রকল্পে ডিপিএম বা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে হবে না। ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হবে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে। এ তথ্য জানিয়েছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন। মাত্র দুই মাসে ২০ বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন কেনাকাটায় ও প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতি ঠিক করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

দেশের লাইফলাইন চট্টগ্রাম বন্দরে অপারেশনে কার্যক্রম ব্যাহত হলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমদানি রপ্তানি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও দেশের অর্থনীতি। অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার আগে ও পরে ইন্টারনেট সেবা বন্ধে এবং বন্যায় বন্দরে পণ্য ডেলিভারি ব্যাহত হয়। তৈরি হয় ব্যাপক জাহাজ ও কনটেইনার জট।

এই সংকট অনেকটা কাটিয়ে উঠলেও নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরে বন্দরের চলমান মেগা প্রকল্পগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। সেই সঙ্গে বন্দরের সবচেয়ে আয়বর্ধক কনটেইনার টার্মিনাল এনসিটি নিয়ে সরকারের নীতি কি হবে, কারা পরিচালনা করবে এনসিটি এ নিয়েও উদ্বিগ্ন বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ব্যবহারকারীরা।

এই প্রেক্ষাপটে নৌপরিবহন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার দেড় মাসের মাথায় প্রধান সমুদ্র বন্দরের হালচাল, কার্যক্রম এবং প্রকল্পগুলোর খুঁটিনাটি জানতে তিনদিনের সফরে গত রোববার চট্টগ্রামে আসেন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বন্দরের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও টার্মিনাল পরিদর্শন এবং চলমান প্রকল্প গুলো নিয়ে কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন।

নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, 'বন্দরগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার হলে, দুর্নীতি বন্ধ হলে আয় বাড়বে বলে মনে করেন উপদেষ্টা।'

তবে সব অনিয়ম রাতারাতি ঠিক হবেনা জানিয়ে বলেন, 'আগামীতে কোন প্রকল্পে ডিপিএম বা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ঠিকাদার নিয়োগ হবে না।'

নৌ পরিবহন মন্ত্রাণলায়ের উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'অনেক লাইসেন্স দেওয়া আছে কারো মামা, কারো চাচা এটা কোনো কাজ হলো না। লাইসেন্স নিয়ে হয়তো আর একজনের কাছ থেকে বিক্রি করবে। এই সবই আমাদের নজরে আছে।'

প্রস্তাবিত মেগা প্রকল্প বে টার্মিনালে বিদেশি বিনিয়োগ ঠিক আছে উল্লেখ করে সবগুলো উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা পুনরায় পর্যালোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

সাখাওয়াত হোসেন আরও বলেন, 'উপার্জন বেশি হতে পারে যদি পোর্টগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবহার করি। পোর্টের মধ্যে যে অরাজকতা আছে সেটা বন্ধ করতে পারি। পোর্টের মধ্যে যে চুরিচামারি আছে সেটা বন্ধ করতে পারি। আর পোর্টের ব্যবস্থাপনায় যারা আছে তাদের দৃঢ় সংকল্প পোর্টকে পরিষ্কার করা।'

বর্তমানে বন্দরের সবচেয়ে বড় ও আয়বর্ধক কনটেইনার টামির্নাল এনসিটি ১৮ বছর ধরে পরিচালনা করছে বেসরকারি অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক।

সরকার পতনের কয়েক মাস আগে হাসিনা সরকার এনসিটিতে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে। যদিও বন্দরের কর্মকর্তা ও শ্রমিকরা বন্দরের অর্থে নির্মিত আয়বর্ধক এই টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরকে না দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন।

চট্টগ্রাম বন্দর বছরে ৩০ থেকে ৩১ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে। এর ৫৫ ভাগ হ্যান্ডলিং হয় ও বন্দরের সিংহভাগ আয় আসে এই টার্মিনাল থেকে।

নৌ পরিবহন উপদেষ্টা এনসিটি ব্যাপারে সাংবাদিকদের নাগরিক কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন।