ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে এভাবেই নৌপথ বন্ধ করে নদীতে উদ্গিরণ হওয়া গ্যাস ড্রামে সংরক্ষণ করে প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে বাসাবাড়ি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র।
সদর উপজেলার বাকাইল, আনন্দপুর ও শ্যামপুর গ্রামে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে প্রায় দুই দশক ধরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রভাবশালী চক্রটি। তবে চাপ নিয়ন্ত্রণ না করেই গ্যাস সরবরাহের ফলে অগ্নিঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর এখন টিভিতে প্রতিবেদন প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড, বিজিএফসিএল কর্তৃপক্ষ।
মূলত তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ৩ নম্বর কূপ খননের সময় গ্যাস লিকেজ হয়ে মাটির ওপরের স্তরে চলে আসে। পরবর্তীতে সেই গ্যাস শ্যামপুর, শ্যামপুর ও বাকাইল গ্রামের তিতাস নদীর বিভিন্ন স্থানে উদ্গিরণ হতে থাকে। সোমবার ( ৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শ্যামপুর গ্রামে নদীতে অভিযান চালিয়ে ২২টি ড্রাম ও প্লাস্টিক পাইপ অপসারণ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযান অব্যাহত রেখে গ্রামে ঝুঁকি নিয়ে ব্যবহার করা গ্যাস সংযোগগুলো অপসারণসহ চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম শেখ বলেন, ‘যারা অবৈধভাবে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করছে। আর্থিক লেনদেনের কারণে এখানে আইনশৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার কারণে আজকে আমাদের এই অভিযান। অভিযানের আমরা সবগুলো উৎস থেকে পাইপলাইন কেটে দিয়েছি।’
তবে গ্যাসের উদ্গিরণ বন্ধের পদ্ধতি নেই তিতাসের নিয়ন্ত্রক বিজিএফসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে। যদিও উদ্গিরণ হওয়ার গ্যাসের উৎস অনেক আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক।
বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘লিকেজ কি পরিমাণ হয়েছে সেটা পরিমাপ করা সম্ভব না। একটা টেকনিক্যাল কারণে এই লিকেজ হয়েছে। টেকনিক্যাল জায়গা আমরা ঠিক করে ফেলেছি।’
২০০৭ সালে তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ৩ নম্বর কূপটি বন্ধ ঘোষণা করে বিজিএফসিএল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে তিতাসের ২৪টি কূপ উৎপাদনে রয়েছে। যা থেকে প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে যাচ্ছে অন্তত ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।