যতদূর চোখ যায় শুধুই অথৈ পানি। নীল আকাশের নিচে এমন দৃশ্য মন কাড়ে যে কারোরই। প্রতি বছর জুনের শুরু থেকে হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসেন ভ্রমণ পিপাসুরা।
এ বছর জুনের মাঝামাঝি থেকে ৩ দফা বন্যায় সুনামগঞ্জের সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও খুলে দেয়া হয় পর্যটন কেন্দ্রগুলো।
কিন্তু দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে আবারও দর্শনার্থী শূন্য হয়ে পড়ে পর্যটন কেন্দ্র। টাঙ্গুয়ার হাওর, নীলাদ্রি লেক, লাকমা ছড়া, যাদুকাটা নদী, শিমুল বাগানসহ দর্শনীয় স্পটে নেই পর্যটক।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের তরুণ উদ্যাক্তো অমিত রায়। দুই বছর আগে ৪০ লাখ টাকায় দুটি হাউসবোট তৈরি করেন। শুরুতে আয়ও হয়েছিল বেশ।
কিন্তু বন্যা আর দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে আশানুরূপ পর্যটক না আসায় বর্তমানে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাকে। একই অবস্থা জেলার প্রায় ৪ শতাধিক হাউজবোট মালিকের।
সুরমা নদীর সাহেব বাড়ি, মল্লিকপুর, লঞ্চঘাট, অচিন্তপুর ঘাটে নোঙ্গর করে অলস পড়ে আছে হাউসবোটগুলো।
তরুণ উদ্যাক্তো ও হাউসবোট মালিক অমিত রায় বলেন, ‘তিন দফা বন্যা মানুষকে একটু আশাহত করেছে। সে সময় হাউসবোট ব্যবসায় আমরা অনেক লোকসান করেছি। যাদের থেকে অ্যাডভান্স নেয়া হয়েছিল তাদের টাকা ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।’
আরেক মালিক বলেন, বর্ষাকালে এখানে আসল শোভা পায় এবং টাঙ্গুয়ার হাওর জমে ওঠে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছে, পর্যটন খাতের এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে।
সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খায়রুল হুদা চপল বলেন, ‘সুনামগঞ্জের যে শিল্প খাত রয়েছে তা অনেকটাই এখানকার পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের যে ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়।’
তিন দফা বন্যা ও দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে সুনামগঞ্জের পর্যটন খাতে এ বছর প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।