পরিষেবা
অর্থনীতি

সাধারণ বীমা কোম্পানির ব্যয়ের ৮০ শতাংশ খরচ হয় বেতন-ভাতায়

নন-লাইফ বা সাধারণ বীমা কোম্পানিসমূহের ২০২২ সালে ৪১.৩০ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় হয়েছে। অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, অধিকাংশ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সর্বোচ্চ ব্যয় হয় উন্নয়ন কর্মকর্তাদের বেতন ও অন্যান্য ভাতাদি প্রদানে, যা মোট ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের ৮০ শতাংশ।

বুধবার (১৫ মে) বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ নন-লাইফ বীমাকারীসমূহের 'ব্যবস্থাপনা ব্যয়' নির্ধারিত সীমার মধ্যে রাখার বিষয়ে একটি মত বিনিময় সভায় এ তথ্য উঠে আসে।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন ও তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কোম্পানির আকারের তুলনায় বেশি জনবলের কারণেই ব্যয় বেশি হয়। পারিবারিক সদস্য, আত্নীয়দের জনবলে নিয়োগ করা হয় যারা প্রকৃতপক্ষে কর্মরত থাকেন না। চাকরি না করেও বেতন-ভাতাদি খাতে উক্ত ব্যয় হিসেবে প্রদর্শন করা হয়।

এ সভার উন্মুক্ত আলোচনায় উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়। বিভিন্ন কোম্পানির চেয়ারম্যান, প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রতিন্ধকতা এবং তা উত্তরণের জন্য পরামর্শ দেন। আলোচনায় মূলত কোম্পানীর অনুমোদিত ব্যবস্থাপনা ব্যয় আইন অনুযারী সীমার মধ্যে রাখার ক্ষেত্রে কোম্পানির চেয়ারম্যানদের নিজেদের ইতিবাচক মানসিকতা দ্বারা নিজেদের সেক্টরকে উন্নত করার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ কে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে অভিমত প্রকাশ করেন।

কোম্পানির প্রতিনিধিরা আরও জানান, কোম্পানিগুলো নিজেদের মধ্যে এক হীন প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। তারা বীমা গ্রাহকদের অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে কমিশন বা প্রিমিয়াম প্রদানে ছাড় দিয়ে থাকেন। যা আর্থিক বিবরণীতে 'ব্যবস্থাপনা ব্যয়' হিসেবে দেওয়া হয়। এ ধারা বন্ধ হওয়া উচিত মর্মে সব বক্তা সভায় অভিমত পোষণ করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিয়মতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বাংলাদেশ বীমা সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন জানান, কোম্পানিসমূহের সম্পূর্ণ অটোমেশনের অন্তর্ভুক্তকরণ অনেকাংশে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। এছাড়াও ব্যাপক প্রচার প্রচারণা দ্বারা জনসচেতনা বৃদ্ধি করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

সভার সভাপতি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী সমাপনী বক্তব্যে বলেন, 'বীমা শিল্পের উন্নয়ন ও প্রসারে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সর্বদা চেষ্ঠা করছে । প্রোডাক্ট ডাইভারসিটি, প্রোডাক্ত ডেভেলপমেন্ট এর জন্য বিভিন্ন সভা, সেমিনার এর আয়োজন করা হয় এবং স্টার্টআপ ইন্স্যুরটেক এর সাথে ডিজিটাল ভাবে নতুন নতুন বীমা প্রোডাক্ট এর ধারনা নেওয়া হয়। এছাড়াও কৃষি বীমা, মৎস্য বীমা, গৃহয়ায়ন বীমা, ব্যাংকাসুরেন্স চালু করা হয়েছে। কোর সফটওয়্যার এর ক্লাউড এর মাধ্যমে কোম্পানিসমূহকে অটোমেশনে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং সম্পূর্ণভাবে অটোমেশনের আওতায় আনার জন্য চেষ্ঠা করা হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'বীমাকারীর দায়িত্ব রিসার্চ ডেভেলপমেন্টের জন্য ব্যয়, ইনভেস্টমেন্ট করা, নতুন নতুন পলিসি উদ্ভাবন করা। মূলত বীমা শিল্পের সার্বিক উন্নয়নে বীমাকারীর ভূমিকাই মূখ্য। বীমাকারীর আইনের সঠিক চর্চা এবং ইতিবাচক মানসিকতার দ্বারা বিভিন্ন সম্যস্যার সমাধান করা সম্ভব।'

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর