গ্রীষ্মের এই সময়ে যখন বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা সেসময় কেন্দ্রটি পুনরায় উৎপাদনে আনতে পারায় স্বস্তিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এক কর্মী বলেন, 'দুইটা বিয়ারিংয়ে যে সমস্যা ছিল তা সমাধান হয়েছে।'
২০১২ সালের মার্চে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আসা কেন্দ্রটি নিয়মিত পরীক্ষার অংশ হিসেবে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়। সব কাজ শেষ করে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাস টারবাইন ইউনিটটি চালু করতে গেলে ধরা পড়ে গ্যাস বুস্টার যন্ত্রের ত্রুটি। রিজার্ভে থাকা গ্যাস বুস্টার যন্ত্রটি আগে থেকে অকেজো থাকায় বন্ধ হয়ে যায় পুরো বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে গ্যাস বুস্টার কেনাসহ আমেরিকা থেকে আনা হয় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। চায়না, ইন্দোনেশিয়ান এক্সপার্ট টিম ও বিদ্যুকেন্দ্রের প্রকৌশলীদের যৌথ চেষ্টায় সম্পন্ন হয় নতুন গ্যাস বুস্টার বসানোর কাজ। দীর্ঘ ১৪ মাস বন্ধ থাকার পর গত ১৮ মার্চ উৎপাদনে আসে ইউনিটটি। তবে উৎপাদনে যাওয়ার মাত্র ১৭ দিন পর ৪ এপ্রিল এই ইউনিটের একটি জেনারেটরের বেয়ারিংয়ে ওয়েল লিকেজ থেকে আগুনের ঘটনায় পুনরায় বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রটি।
অবশেষে প্রায় ১ মাস ১০ দিন পর আবারও শুরু হয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। এই কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। যা চাঁদপুর ও এর আশপাশের জেলার বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে বলে জানান ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যস্থাপক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. নূরুল আবছার।
তিনি বলেন, 'চাঁদপুর ইন্দোনেশিয়ান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তারা কাজ করে এখানে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তারা ইন্দোনেশিয়া থেকে নিয়ে আসে। ৪০ দিন পর আবারও উৎপাদনে আসতে পেরেছি আমরা।'
গ্যাস টারবাইন ইউনিট চালুর পাশাপাশি ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন স্টিম টারবাইন ইউনিট সচলে কাজ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ পৌঁছেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রে। দ্রুতই চায়না থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন যোগ দিবে রিপেয়ারিং কাজে। গ্যাস টারবাইনের যন্ত্রাংশ কেনা ও রিপেয়ারিং কাজে খরচ হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ২১ হাজার ডলার ও স্টিম টারবাইনে ব্যয় হবে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। বর্তমানে গ্যাস টারবাইনের মাধ্যমে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফুয়েল খরচ হয় প্রায় ৫ টাকা যা স্টিম টারবাইন চালু হলে আরও কমে আসবে।
২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । ২০১২ সালের মার্চ মাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে কেন্দ্রটি। চীনা কোম্পানি চেংদা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে।