আজ (বৃহস্পতিবার, ১৬ মে) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৮ সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন। আপিল বিভাগ জানায়, কয়দিন নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকলে সমস্যা নেই।
আদালতের শুনানিতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন, শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ, ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক, ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল। আর চায়না কোম্পানির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।
স্থিতাবস্থা জারির বিষয়ে চায়না কোম্পানির আইনজীবী মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, ‘ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে হাইকোর্টের দেয়া আদেশের ওপর আপিল বিভাগ দুই সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নে তখন তিনি বলেন, ‘চায়না ব্যাংক অব এক্সিম জানিয়ে দিয়েছে শেয়ার হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত তারা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজে টাকা দেবে না। এর ফলে আপাতত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকবে।’
সবশেষ গত ১২ মে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞার আদেশ তুলে নেন উচ্চ আদালত। যার ফলশ্রুতিতে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে থাইল্যান্ডের ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরে সব ধরনের বাধা কেটে যায়।
এর পরই আদালতের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আবার আপিল বিভাগে আবেদন করে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানি। যার প্রেক্ষাপটে আজ আপিল বিভাগ নতুন করে স্থিতাবস্থা জারি করেছেন।
এর আগে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। সেইবারও ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।
২০১১ সালে শুরু হয় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজ। এতে বিনিয়োগকারী হিসেবে এগিয়ে আসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড (ইতাল-থাই)। শুরু থেকেই প্রকল্পের অর্থের সংস্থান করতে প্রতিষ্ঠানটি ব্যর্থ বলে অভিযোগ ওঠে।
২০১৯ সালে চায়না এক্সিম ব্যাংক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়নার (আইসিবিসি) কাছ থেকে ৮ কোটি ৬১ লাখ ডলার ঋণ জোগাড় করে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানি। যার বিনিময়ে চীনের দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানির ৪৯ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ হলো এই ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্বাহী প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের তথ্যানুযায়ী, এটি নির্মাণে খরচ হচ্ছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুনে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি জানিয়েছেন, আগামী বছরের শুরুর দিকে পুরো কাজ শেষ হবে।