হুমকির মুখে দেশের প্রথম পরিবেশবান্ধব রিসাইকেল পোশাক তৈরি প্রতিষ্ঠান সাইক্লো

শিল্প-কারখানা
অর্থনীতি
0

আন্তর্জাতিক বাজারে হুমকির মুখে দেশের প্রথম পরিবেশবান্ধব রিসাইকেল পোশাক তৈরি প্রতিষ্ঠান সাইক্লো। মূলত নামের মিলের কারণে একটি সুইডিশ কোম্পানি তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির শঙ্কা, এই বিরোধ নিষ্পত্তিতে তারা অবমূল্যায়িত হলে দেশে বাধাগ্রস্ত হতে পোশাক শিল্পের রিসাইকেল খাতে নতুন বিনিয়োগ। যার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দেশের অর্থনীতি।

দেশের শীর্ষ রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক। উৎপাদনের দিক থেকে যা বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে। দেশে তৈরি পোশাকের বাজার প্রায় ৫ হাজার কোটি ডলারের। রপ্তানির এ ধারা অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক বাজার বিবেচনায় পোশাকের বৈচিত্র্য ও ক্রেতার চাহিদা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়।

জলবায়ুর প্রতিকূলতায় বৈশ্বিক ক্রেতাদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা যেমন বাড়ছে। তেমনি তৈরি পোশাকের বর্জ্যের পরিবেশ সহায়ক রিসাইকেল বা পুনর্ব্যবহারে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদাও এখন শীর্ষে। তথ্য বলছে, ২০২২ সালে বিশ্ববাজারে রিসাইকেল টেক্সটাইল ফাইবারের বাজার ছিল ৫৭২ কোটি ডলারের। ২০২৮ সাল নাগাদ যা ৬৮৬ কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা এ খাতের উদ্যোক্তাদের।

রিসাইকেল পোশাক উৎপাদন ব্যয়বহুল হলেও দেশে যে কয়টি প্রতিষ্ঠান আছে তার মধ্যে শীর্ষে সিমকো স্পিনিং ও টেক্সটাইলস মিলের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সাইক্লো। যারা পুনব্যবহারযোগ্য তন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধন করে ২০১৪ সালে।

দেশের প্রথম এ প্রতিষ্ঠানটি তাদের উৎপাদিত কাঁচামাল রপ্তানি করছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্তত ২০টি দেশে। সাইক্লো প্রতিবছর ৩০ মিলিয়ন কেজি ঝুট কাপড় রিসাইকেল করে। যাদের বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ ১৫ মিলিয়ন ডলার। তবে এই প্রতিষ্ঠানটির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে ২০২১ সালে যাত্রা শুরু করা সুইডিশ ফ্যাশন প্রতিষ্ঠান সাইক্লোন।

সাইক্লো আইন কর্মকর্তা এবিএম হামিদুল মিসবাহ বলেন, সাইক্লো যেটা আমাদের বাংলাদেশের ব্র্যান্ড। যেটার জন্ম প্রথমে, ব্যবহার প্রথমে। এই কারণে এইটা প্রাইরোটি। এটার কাছাকাছি নকল করে অন্যকেউ ব্র্যান্ড করে অথবা ট্রেডমার্ক ক্রিয়েট করে তাহলে সেটা প্রাইরোটিতে পরে আসে। অনেকগুলো দেশে তারা চাচ্ছে সাইক্লো ব্র্যান্ড ব্যবহার বন্ধ করে দেই। যা একধরেনের আইনের ভায়োলেশন।

নিজস্ব মেধাস্বত্ত কেড়ে নেয়ার শঙ্কায় সাইক্লোনের সাথে বিরোধ নিষ্পত্তিতে ইতিবাচক ফলাফল না পাওয়া গেলে হুমকির মুখে পড়তে পারে তাদের ব্যবসা। নষ্ট হতে পারে ৮০০ কর্মীর কর্মসংস্থান। এতে সম্ভাবনাময় রিসাইকেল শিল্পের উদ্যোক্তা কমার পাশাপাশি স্থবিরতা দেখা দিতে পারে এ খাতের বিনিয়োগ থেকে শুরু করে সামগ্রিক অর্থনীতিতে।

আইন কর্মকর্তা এবিএম হামিদুল মিসবাহ বলেন, ‘আমাদের যথেষ্ট লিগ্যাল প্রটেকশন থাকা সত্ত্বেও তারা বিভিন্ন দেশে মানছেন না কেন? কারণ এইটা বাংলাদেশে জন্ম। বাংলাদেশকে এত গুরুত্ব দেয়ার কিছু নেই।’

ইউরোপসহ বিশ্বের প্রধান ক্রেতাদের যখন পরিবেশের সুরক্ষায় টেকসই ও রিসাইকেল পোশাকে জোর দিচ্ছে। তখন দেশে পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানা ২৩২টি। বিশ্বের সেরা ১০০টি কারখানার ৫০টিই বাংলাদেশে। তাই ভবিষ্যতের বৈশ্বিক এ বাজার ধরতে রিসাইকেল কারখানা বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।

ইএ