বিশ্বে চিনির সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী ব্রাজিল। সেখান থেকেই বাংলাদেশ প্রধানত অপরিশোধিত চিনি আমদানি করে। পরে তা প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে বিক্রি করা হয়। ব্রাজিলে এবার চিনির ভালো উৎপাদন হয়েছে, উদ্বৃত্তও রয়েছে দেশটির কাছে। এছাড়াও রপ্তানি জটিলতা কাটিয়ে স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক বাজারে চিনি বেচাকেনা চলছে। এতেই দাম নিম্নমুখী হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে চিনির বাজার দর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি মেট্রিক টন সর্বোচ্চ ৬শ’ ৭৭ ডলারে ঠেকে। তবে ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে এখন তা নেমে এসেছে ৫শ’ ১২ ডলারেরও নিচে। যার প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারেও। খুচরায় পণ্যটির দাম কমেছে কেজিতে প্রায় ২০ টাকা।
ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, ‘কিছুদিন আগে বস্তাপ্রতি ২০০ টাকা বেশি ছিল। সেখানে বস্তাপ্রতি ৬ হাজার ২০০ টাকা বিক্রি হলেও এখন ৬ হাজার ২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।’
একই অবস্থা পাইকারি বাজারেও। সেখানেও চিনির দাম নিম্নমুখী। পণ্যটির সরবরাহও স্বাভাবিক। চট্টগ্রামের বাজারে মূলত এস আলম গ্রুপের চিনির একচেটিয়া প্রভাব। কারখানাটি থেকে পর্যাপ্ত চিনির সরবরাহ রয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় বেচাকেনা নেই। আড়ৎদাররা বলছেন, বড় অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় বেচাকেনা কমেছে।
মেসার্স ইবনাত ট্রেডার্সের ম্যানেজার আবুল কাশেম বলেন, ‘এখন বিক্রি কম। মার্কেটের অবস্থা ভালো না।’
তবে বিশ্ব বাজারের সাথে স্থানীয় বাজারের দামে এখনও রয়েছে বিস্তর ফারাক। বিশ্ববাজারে চিনির দর প্রায় ২৪ শতাংশ কমলেও দেশের বাজারে কমেছে মাত্র ১৩ শতাংশ। এজন্য পরিবহণ খরচ ও শুল্ক করাকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় এবং সে অনুযায়ী চাহিদা না থাকায় দাম আরও কিছুটা কমতে পারে বলে ধারণা তাদের।
মেসার্স জিরি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘পাইকারিতে প্রতি কেজি ১১৮ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু খুচরায় একটু বেশি বিক্রি হচ্ছে।’
ইন্টারন্যাশনাল সুগার অর্গানাইজেশনের তথ্য বলছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিশ্বে চিনির উৎপাদন হবে ১শ ৮০ মিলিয়ন টন। তবে অভ্যন্তরীণ চাহিদায় দ্বিতীয় বৃহৎ চিনি উৎপাদক দেশ ভারত ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চিনি রপ্তানি বন্ধ রেখেছে।