রমজান মাসে ইফতারের সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ মুড়ি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে ভোক্তার রুচি। হাতে ভাজা মুড়ির জায়গা দখল করেছে মেশিনে উৎপাদিত মুড়ি। আধুনিক প্রযুক্তি হওয়ায় বেড়েছে উৎপাদন ক্ষমতাও। গ্রামের সেই রসুই ঘরের খোলায় ভাজা মুড়ি এখন রুপ নিয়েছে করপোরেট পণ্যে।
পরিসংখ্যান বলছে, বাণিজ্যিকভাবে দেশে প্রায় দুই হাজারের মতো মুড়ির কারখানা গড়ে উঠেছে। আর বার্ষিক ব্যবসায় প্রায় ৬শ' কোটি টাকার বেশি।
গাজীপুরের আল-মদিনা মুড়ি মিলের মুন্সী ইকবাল হোসেন বলেন, '১ হাজার টনের কাছাকাছি মুড়ি উৎপাদনের টার্গেট নিয়ে আমরা কাজ করতেছি।'
শীতলক্ষ্যার অববাহিকায় গড়ে ওঠা প্রাচীন বাণিজ্যিক নগরী নারায়ণগঞ্জ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখানকার কারখানায় উৎপাদিত মুড়ির কদর বেশি ভোক্তার কাছে।
নারায়ণগঞ্জের নিউ খাজা মুড়ি মিলের পরিচালক নীলরতন ঘোষ বলেন, 'আমি অন্যান্য সময় যদি ১০০ বস্তা চাল ভাজি তাহলে এখন ১২০-১৩০ বস্তা ভাজতে হচ্ছে। যাতে আমার কাস্টমারের চাহিদা পূরণ করতে পারি।'
বাজার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যেই বাজারে পাওয়া যায় সব ধরনের মুড়ি। তবে হাতে ভাজা মুড়ির জন্য গুণতে হয় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। কারখানা থেকে ভোক্তা পর্যায়ে মুড়ির দামের পার্থক্য হয় ১০ থেকে ২০ টাকা।
বাজারে মুড়ির দামের চিত্র। ছবি: এখন টিভি
রমজানে উৎপাদন বাড়াতে স্থায়ী কর্মীর পাশাপাশি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেতনে অনেকেই চুক্তিভিত্তিক কাজ করে থাকেন। এ খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় ৭ লাখ মানুষের কর্ম। রমজানে এই কাজে অনেকের মৌসুমি কর্মসংস্থান হয়।
ইতোমধ্যে রমজানের মুড়ি উঠতে শুরু করেছে রাজধানীসহ বিভিন্ন খুচরা বাজারে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, 'চালের দাম বাড়ায় রোজার আগেই বেড়েছে মুড়ির দাম।'
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন থেকে রমজানের বেচাকেনা শুরু হয়েছে। বস্তাপ্রতি ২৫০-৩০০ টাকা করে বেড়েছে দাম। গাড়ি ভাড়া, বহন করার খরচসহ বিভিন্ন কারণে মুড়ির দাম বাড়ছে।
সারাদেশে মুড়ির চাহিদা পূরণ হওয়ার পর বাড়তি অংশ বিভিন্ন কোম্পানি বাজারজাত করে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বেশ কয়েকটি দেশে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা আনতেও সক্ষমতা দেখাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই মুড়ি।