উদ্যোক্তারা বলছেন, ডলার সংকটের সঙ্গে নির্বাচনী বছরে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় তৈরি পোশাক খাতে বিনিয়োগে সাহস পাচ্ছেন না উদ্যেক্তারা। এছাড়া প্রত্যাশিত ক্রয়াদেশ না পাওয়ায় নতুন বিনিয়োগ করেও বিপাকে পড়েছেন কেউ কেউ।
২০২১-২২ অর্থ বছরে দেশে পোশাক রপ্তানি হয় ৪২ বিলিয়ন ডলার, ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৬ বিলিয়ন ডলারে। রপ্তানি আয়ে ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি উদ্যোক্তাদের আরো বড় স্বপ্ন দেখায়। অনেকেই সক্ষমতা বাড়াতে কারখানার পরিসর বাড়ান, সংযোজন করেন অত্যাধুনিক মেশিন।
বিজিএমইএর হিসেবে , দেশে ২০২১ সালে ৮৬ টি নতুন পোশাক কারখানা চালু হয়। ২০২২ সালে এসে নতুন চালু হওয়া কারখানার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যায়, দাঁড়ায় ১৭৮টিতে। তবে ২০২৩ সালে এসে ধারাবাহিক বিনিয়োগে আবারো ভাটার টান। অক্টোবর পর্যন্ত নতুন পোশাক কারখানা চালু হয়েছে মাত্র ১১৫টি।
শিল্প মালিকরা বলছেন, এলসি ও ডলার সংকট, বৈশ্বিক মন্দা এবং এ বছর রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে নতুন বিনিয়োগে পা বাড়াচ্ছেন না অনেক কারখানা মালিক।
বিনিয়োগের নেতিবাচক ধারার প্রতিফলন দেখা গেছে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতেও। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী ২০২১-২২ অর্থ বছরে পোশাক কারখানার জন্য ৭৫২ মিলিয়ন ডলারের যন্ত্রপাতি আমদানি হলেও ২০২৩ সালে তা কমে যায় প্রায় ৫০ শতাংশ। এ বছর আমদানি হয় মাত্র ২৯০ মিলিয়ন ডলারের যন্ত্রপাতি।
পেসিফিক জিন্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মো. তানভীর বলেন, টেক্সটাইল সেক্টর বা আরএমজি সেক্টরে বিনিয়োগ কমে গিয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আশা করি ২০২৪ সালে বাড়বে।
এর মধ্যে গত ২ বছরে কারখানার পরিধি বাড়িয়েও প্রত্যাশিত ক্রয়াদেশ পাননি অনেকে। তাই আগের রপ্তানি আয় ধরে রাখাকেই চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বিনিয়োগে খরা কাটবে না বলে মনে করছেন তারা।
বিকেএমইএ পরিচালক গাজী মো. শহীদুল্লাহ বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা সিদ্ধান্ত নেবে। নির্বাচন হয়ে গেলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা করি।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ জানান, পরিমাণ বাড়ানোর জন্য যে মেশিনগুলো নিয়ে আসা হত তা এখন বন্ধ। চাহিদা থাকলে নিয়ে এসে আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে পারবো।
দেশে বর্তমানে তৈরি পোশাক কারখানা আছে প্রায় ৪ হাজার। বিজিএমইএর হিসাবে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ৪ বছরে দেশে ৫৮০টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়েছে।





