আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

শুল্ক কমার পরও বেড়েছে চিনির দাম

শুল্ক কমার পরও অস্থির চিনির বাজার। নানা অযুহাতে পণ্যটির দাম না কমে উল্টো আরও বেড়েছে। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে প্রতি মন চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৫৫০ টাকায়। যা গেলো ৪/৫ দিন আগেও ছিল অন্তত ২০০ টাকা কম। বাজারে অস্থিরতার জন্য অপর্যাপ্ত সরবরাহের কথা বলছেন আড়তদাররা। আবার কেউ বলছেন গুটি কয়েক প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরশীলতার কারণেই কারসাজির সুযোগ পাচ্ছে আমদানিকারকরা। তাই বাজারে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদেরও চিনি আমদানির সুযোগ তৈরির দাবি অনেকের।

ঊর্ধ্বমুখী চিনির দামে লাগাম টানতে শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার। এরপর দাম কিছুটা কমলেও আবারও বাড়তে শুরু করেছে নিত্যপণ্যটির দাম। গত কয়েকদিন ধরেই অস্থির চিনির বাজার। কেজিতে ৫/৬ টাকা এবং বস্তায় বেড়েছে ২০০ টাকা পর্যন্ত।

আগে চিনিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ছিল ৩০ শতাংশ। এখন ১৫ শতাংশ। এর বাইরেও ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ৭ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হতো চিনি আমদানিতে। সবমিলিয়ে প্রতি কেজিতে প্রায় ৪১ টাকা বাড়তি গুনতে হতো ভোক্তাদের। কিন্তু শুল্ক কমানোর পর কেজিতে ১০ থেকে ১১ টাকা দাম কমার আশা করেছিলো ভোক্তারা। তবে সে আশায় গুড়ে বালি। বাজার অস্থির হয়ে উঠছে প্রতিদিনই।

মেসার্স জিরি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোজাম্মেল হক চৌধুরি বলেন, 'শুল্ক কমানোর পর চিনির দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কমেছিল । তারপর আবার বেড়েছে চিনির দাম।'

দেশে প্রতি বছর চিনির চাহিদা প্রায় ২২ লক্ষ টন। চাহিদার। এরমধ্যে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশই আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হয়। আর চট্টগ্রামের চিনির চাহিদার পুরোটাই মিটিয়ে থাকে এস আলম গ্রুপ। যা দেশের মোট চাহিদার ১৫-২০ শতাংশ। তবে সেই উৎস থেকেও সরবরাহ কম। এই সুযোগে চট্টগ্রামের বাইরের কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে চিনি আসছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয় বলছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ী জাফর আলম বলেন, 'বাজারে চিনি আমদানির কোনো সংগঠনকে দেখতে পারছি না। বাজারে পর্যাপ্ত মাল আছে কিন্তু তারপরেও কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা বেড়ে গেছে।'

দাম কমাতে সরকারের নানামুখী চেষ্টার পরও চিনির বাজার চলছে উল্টোপথে। ইন্টারন্যাশনাল সুগার অর্গানাইজেশনের তথ্য বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে কমেছে চিনির দাম। চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রতি টন চিনি বিক্রি হয়েছে ৫শ' ৮৫ ডলারে। মাঝখানে তা কমে ৫শ' ৬৫ ডলার পর্যন্ত নামে। তবে এখন তা উঠেছে ৫শ' ৭৭ ডলারে। দেশের বাজারে পণ্যটির দাম না কমার পেছনে বাজার সিন্ডিকেটকে দুষছেন অনেকে। বলছেন, চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণ করে ৫/৬ টি প্রতিষ্ঠান। এখানে প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি করতে না পারলে দাম নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে। সাথে দেশীয় চিনিকলগুলোকে সক্রিয় করার পরামর্শ ব্যবসায়ীদের।

খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এহসান উল্ল্যাহ জাহেদী বলেন, 'শুল্ক কমানোর পরে কিন্তু বাজার বেড়েছে। আপনারা জানেন শুল্ক কমানোর পরে বাজারে প্রতি মণে ২০০ টাকা কমে গিয়েছিল। আমরা যেহেতু আমদানি নির্ভর সেহেতু বিশ্ববাজারে যদি দাম বেশি হয় তাহলে কিন্তু কমে বেচার কোনো সুযোগ নাই।'

বর্তমানে চট্টগ্রামের বাজারে খুচরায় প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩২ টাকায়।