আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

রাজনৈতিক অস্থিরতায় তিনমাসে সারাদেশে গাড়ি বিক্রিতে ধস

চট্টগ্রাম

মৌলিক চাহিদা পূরণের পর অনেকেরই চাওয়া থাকে ব্যক্তিগত গাড়ি। কারখানা, অফিস আদালত বা ভাড়ায় খাটাতেও গাড়ি কেনেন অনেকে। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতায় গত তিনমাসে সারাদেশে গাড়ি বিক্রিতে নেমেছে ধস। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট ও সরকারের পট পরিবর্তনে দ্বিধায় পড়েছেন ক্রেতারা।

চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে আছে বিপুল সংখ্যক গাড়ি। দীর্ঘ দিন ধরে খালাস না হওয়ায় যা এখন রয়েছে নিলামে ওঠার অপেক্ষায়। এমন অবস্থায় এবছরে আমদানি করা গাড়ির নিলাম স্থগিত রাখার আবেদন করেছে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানিকারকদের সংগঠন বারভিডা।

প্রাডো, ফিল্ডার, হ্যারিয়ার, এক্সিওসহ নামি-দামি ব্রান্ড ও মডেলের প্রাইভেট কার, জিপ ও মাইক্রোবাস শোভা পাচ্ছে শো রুমে। যদিও ক্রেতার দেখা নেই। ব্যবসায়ীরা বলছেন দেশে চলমান অস্থিরতায় গেলো তিন-চার মাস গাড়ি বিক্রি নেমেছে তলানিতে। আগে মাঝারি আকারের শোরুমে মাসে ১৫ থেকে ২০টি গাড়ি বিক্রি হলেও এখন হচ্ছে ৮ থেকে ১০টি।

চলমান পরিস্থিতি ও তারল্য সংকটে গাড়ি কেনার জন্য ঋণ দিচ্ছে না অধিকাংশ ব্যাংক। ফলে কমেছে এই বিলাসী পণ্যের ক্রেতা। পাশাপাশি অনেক ব্যাংকের পে অর্ডার ক্যাশ না হওয়া ও ব্যাংক থেকে পর্যাপ্ত টাকা তুলতে না পারার প্রভাবও পড়েছে গাড়ি বিক্রিতে।

চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘ দিন ধরে বিপুল সংখ্যক গাড়ি পড়ে আছে খালাসের অপেক্ষায়। ছবি: এখন টিভি

চট্টগ্রাম এম কে অটোমোবাইলের স্বত্বাধিকারী মো. রেজাউল করিম বলেন, 'এখন আমাদের গাড়ি ব্যবসা মন্দায় রয়েছে। এছাড়া গাড়ি ডিউটি ফি বেশি। যার ফলে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে গিয়েছে।'

এদিকে, আমদানির পর খালাস না নেয়ায় বন্দরের শেডে পড়ে আছে নতুন ও পুরোনো মিলিয়ে প্রায় ৪শ' গাড়ি। বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা খালি করতে এসব গাড়ি খালাসের উদ্যোগ নিতে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘৩০ দিন অতিবাহিত হলেই আমরা কাস্টমসকে চিঠি দেই। আর কিছু গাড়ি রয়েছে যেগুলো অতিপুরোনো সেগুলোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

এমন অবস্থায় এবছর আমদানি করা গাড়ি নিলামের বাইরে রাখতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে আবেদন করেছেন আমদানিকারকরা।

জুমায়রাহ অটোমোবাইলের ম্যানেজিং পার্টনার মো. সারোয়ার বলেন, ‘ব্যাংকে অনেক টাকা আটকে আছে আমাদের। যে পরিমাণ টাকা গাড়ি উত্তোলনের জন্য দরকার সে পরিমাণ টাকা আমরা ব্যাংক থেকে তুলতে পারছি না।’

বারভিডা সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরী বাবর বলেন, ‘২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মংলা এবং চট্টগ্রামে যেসব গাড়ি অবতরণ করেছে সেগুলো নিলামের বাহিরে রাখার অনুরোধ জানিয়েছি।’

ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের মান বাড়ায় বেড়েছে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দাম। এ অবস্থায় দাম ক্রেতাদের নাগালে রাখতে সাত বছরের পুরানো গাড়ি আমদানির সুযোগ চান ব্যবসায়ীরা।

এ বছর শুল্ক কর বাবদ বছরে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে সরকার। আর চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে সাত হাজার গাড়ি আমদানি হয়েছে।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর