গেল একসপ্তাহ পণ্য আসতে না পারায় বিবিরবাজার স্থলবন্দরের সামনের সড়কটি ছিল পুরো ফাঁকা। সে দৃশ্য পাল্টেছে। বন্দরের সামনে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় শতাধিক ট্রাক আর কাভার্ডভ্যান। কয়েকদিন স্থবিরতার পর বুধবার থেকে ফের রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়। এদিন রপ্তানি হয় ১৫ টন বাদাম ও ১০০ টন সিমেন্ট।
পরিস্থিতি এখন বেশ স্বাভাবিক। তবে এলসি জটিলতার শঙ্কা যেমন রয়েছে তেমনি আগে থেকে ডলার সংকটের বিষয়টিও ভাবাচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
রপ্তানিকারক মাইনুল হাসান রিপন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারণ করে দেই কোন ফার্ম কত ডলার পাবে। ব্যাংকে গেলে পাওয়া যায় না। ব্যাংককে ম্যানেজ করে এলসি খুলতে হয়।’
কুমিল্লা বন্দরটিতে আমদানির তুলনায় রপ্তানি বেশি হয়। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় পাথর ও সিমেন্ট। তবে, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় প্রভাব পড়ে রপ্তানিতে।
কুমিল্লা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি কাজী সালেহুজ্জামান বলেন, ‘ইন্টারনেটের থেকে বেশি অসুবিধা হয়েছে সড়কে ট্রাক না চলতে পেরে। পণ্য আনা নেয়া করতে পারছি না।’
ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেই সচল ছিল যাত্রী পরিষেবা। ৫ দিনে নিজ দেশে গেছে ৫৬৩ জন ভারতীয় শিক্ষার্থীসহ ৭৫২ যাত্রী। দেশে এসেছে ৩১৪ জন। এসআই কোডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের সার্ভার সচল হয়েছে।
কুমিল্লা বিবির বাজার স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা রেহানা পারভীন বলেন, ‘গ্রাহক পুরোপুরি সেবা যেন পায় সেজন্য আমরা ম্যানুয়ালি কাজ করেছি।’
পণ্য নিয়ে বন্দরে আসতে পারায় খুশি পরিবহণ শ্রমিকরা। দীর্ঘসময় অপেক্ষার কারণে বন্দরে বিশ্রামের সুব্যবস্থার কথা বলেন তারা।
পণ্য পরিবহন শ্রমিকদের একজন বলেন, ‘বন্দরে আসছি পণ্য নিয়ে এখন ভারতে যাবো।’
গেল অর্থবছরে বিবিরবাজার দিয়ে পণ্য আমদানি হয় ২ হাজার ২১১ টন। রাজস্ব আদায় হয় ১৩ কোটি ৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। চলতি অর্থবছর এখন পর্যন্ত ৮৬ হাজার ৬৬১ টন পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যেখান থেকে রাজস্ব আসে ১১০ কোটি ৫ লাখ ৪১ হাজার টাকা। যাত্রী কর বাবদ আদায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
কয়েকদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে কুমিল্লা বিবির বাজার স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা করেন এ বন্দর আবারো পুরানো চেহারায় ফিরে যাবে, সচল করবে দেশের অর্থনীতি।