আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতির মুখে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য

ঘূর্ণিঝড় রিমালে চট্টগ্রামে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। যথাসময়ে পণ্য খালাস ও রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ না হওয়ায় শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে পুরো শিপিং খাত। পণ্য খালাস ও ডেলিভারিতে বিলম্ব হওয়ায় শিপিং ও বন্দরের ডেমারেজ চার্জসহ সব কিছু মিলে কয়েকশো কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরকে বলা হয় দেশের অর্থনীতির প্রাণ ও আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের প্রধান প্রবেশদ্বার। ঘুর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে যখন বন্দরের পণ্য খালাস ও ডেলিভারিসহ সব কাজ বন্ধ থাকে তখন এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে অর্থনীতিতে।

ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাব কাটিয়ে ৩০ ঘণ্টা পর সোমবার (২৭ মে) দুপুর থেকে সীমিত পরিসরে বন্দরের শেড থেকে পণ্য ডেলিভারি শুরু হয়। তবে ঘুর্ণিঝড়ে সম্ভাব্য দুর্ঘটনা ও ক্ষতি এড়াতে জেটি ছাড়তে বাধ্য হওয়া ১৯টি জাহাজ এ দিনও জেটিতে ভিড়তে পারেনি। ফলে পুরো দুদিন জাহাজ শূণ্য ছিল জেটি। এ কারণে হয়নি কোনো পণ্য খালাস এবং রপ্তানি পণ্য শিপমেন্ট।

বিজিএমইএ সাবেক সহ সভাপতি মো. নাসিরুদ্দিন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'যাদের ইমপোট করার পরিকল্পনা ছিল, তাদের কাজ দুই থেকে তিন দিন পিছিয়ে যাবে। আর যাদের এক্সপোর্ট করার পরিকল্পনা ছিল, তাদের গাড়িগুলোর ডেমারেজ চার্জ আসবে।'

এদিকে দুদিন পর মঙ্গলবার জেটিতে জাহাজ ভিড়লেও বার্থিং, পোর্ট ডিউজসহ শিপিং এজেন্টদের চার্জ পুনরায় দিতে হয়েছে। সেই সঙ্গে অপারেটিং ব্যয় বাবদ প্রতিটি জাহাজে দৈনিক ১৫ থেকে ২০ হাজার ডলার খরচ বাড়ছে। এছাড়া যথাসময়ে যাত্রা করতে না পারায় শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে এসব জাহাজ।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, 'জাহাজে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে কার্গোর কমিটমেন্ট কতটুকু রক্ষা করতে পারবে সেটাও একটা ব্যাপার।'

ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরাও। সিএন্ডএফ এজেন্টরা জানান প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারো হাত না থাকলে পণ্য ডেলিভারি ও খালাসে বিলম্বের জন্য চার্জ মওকুফ নেই। ফ্রি টাইমে বা নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য ডেলিভারি না নিলে কনটেইনার প্রতি দৈনিক পোর্ট ও শিপিং ডেমারেজ দিতে হয় সর্বোচ্চ দেড়শো ডলার।

চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক লিয়াকত আলী হাওলাদার বলেন, 'এজেন্টও ডেমারেজ মাফ করে না। আবার বন্দরও ডেমারেজ মাফ করে না। দুর্যোগকারীর ছাড় আছে, কিন্তু সে প্রসেসে গেলে আরও দেড় হাজার ডলার খরচ হবে। সেজন্য কেউ যেতে চায় না।'

সাগর উত্তাল থাকায় বর্হিনোঙরে ৪৯টি জাহাজ থেকে পণ্য খালাস পুরোপুরি বন্ধ। কাজ না থাকায় অলস বসে আছে প্রায় দেড় হাজার লাইটারেজ জাহাজ। চট্টগ্রাম বন্দরে জমেছে প্রায় ৩৯ হাজার টিইউএস কনটেইনার। আবহাওয়া অনূকূল না হলে ঈদের আগে এই জট আরও বাড়বে বলে আশংকা বন্দর ব্যবহারকারীদের।

এসএস