মুদ্রাবাজার
অর্থনীতি
0

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা

নতুন মুদ্রানীতিতে আবারও বাড়ছে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সব ধরণের সুদের হার। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে ২৫ বেসিস পয়েন্ট নীতি সুদের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ শতাংশে।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন।

গত মুদ্রানীতির মূল উদ্দেশ্য ছিল মূল্যস্ফীতি কমানো। সেখানে বছরের প্রথমার্ধে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশ ও দ্বিতীয়ার্ধে ৬ শতাংশে নামানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়। তবে সব পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়ে ডিসেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ৯.৪১ শতাংশে। অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা পরিবর্তন করে ৭.৫ শতাংশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

দ্বিতীয়ার্ধের ঘোষিত মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি না কমা পর্যন্ত সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার জানান, 'আগের নীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও আগের চেয়ে বৃদ্ধি পায়নি, যা ইতিবাচক। প্রথম আট থেকে নয়টি প্রসেসের মূল লক্ষ্য ছিল মূল্যস্ফীতিতে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসা।'

মূল্যস্ফীতি কমাতে ও টাকার মান বাড়াতে ধারাবাহিকভাবে নীতিসুদের হার বাড়ানো হয়েছে নতুন মুদ্রানীতিতে। গত মুদ্রানীতিতে ৬.৫০ শতাংশ থেকে বেশ কয়েকদফা বেড়ে সবশেষ ৭.৭৫ শতাংশ করা হয়। তা আরও বেড়ে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বেশিতে ব্যাংকগুলোকে ঋণ নিতে হবে এখন থেকে। তবে ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের লাভের সমন্বয় পদ্ধতি বহাল রেখে ব্যক্তি সুদহার নির্ধারিত হবে।

গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, 'এবার মনিটরিং পলিসিতে আমরা চারটি জিনিসের দিকে নজর দিয়েছি। প্রথম হচ্ছে পলিসি রেট যা আছে সেটাতে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছি। দ্বিতীয় হচ্ছে করিডোর পলিসি। এটিকে ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১.৫ শতাংশ করা হয়েছে। তৃতীয় আমাদের এক্সচেঞ্জ রেট নির্ধারণ করবে। সবশেষ টাইম বাউন্ড এবং টার্গেট অরিয়েন্টেড গ্রোথ ম্যাপ তৈরি করেছি। এটি আমাদের এনপিএল ইস্যু এবং করপোরেট গভর্ন্যান্সকে ফোর্স করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।'

এছাড়া তফসিলভুক্ত ব্যাংকগুলোর বেশি ডলার কেনা ও সরকারকে ঋণ দেয়ায় ব্যাংকের তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ডলারের মূল্য খোলা বাজারে ছেড়ে না দিয়ে নির্দিষ্ট করিডোর দিয়ে ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

কর্মসংস্থানে যেন কোনো প্রভাব না পড়ে এজন্য এসএমই ও কৃষিতে উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকই গ্যারান্টর হয়ে থাকছে। এতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কম হলেও সহযোগিতা চলমান থাকবে বলে জানানো হয় মুদ্রানীতি ঘোষণায়।

এছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়েও আনা হয়েছে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানান, 'সমস্যা সমাধানে আর্থিক বাজারে সুশাসন নিশ্চিত ও ডলার ফ্লো বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই।'