ব্যাংকপাড়া
অর্থনীতি
0

ব্যাংকখাত পুনর্গঠনে দু'তিন বছর সময় লাগবে: গভর্নর

নতুন টাকা ছাপানো হবে না বরং আমানতকারীদের স্বার্থে ব্যাংকগুলোর মধ্যে লেনদেনের মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকে সহায়তা করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। একইসাথে ব্যাংকের আমানতকারীদের শঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি। অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরতে সময় কম লাগবে। তবে, ব্যাংক খাত পুনর্গঠনে দু'তিন বছর সময় দরকার বলে জানান গভর্নর।

সাবেক গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের পদত্যাগের পর ১৪ আগস্ট নতুন গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব নেন অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর। দায়িত্ব নেয়ার পর আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় খেলাপিতে জর্জরিত দুর্বল ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন নতুন পর্ষদের মাথার ভাজ এসব ব্যাংকে গতি ফেরাবেন কী করে? কারণ সবগুলো ব্যাংককে সহায়তা করতে দরকার অন্তত দুই লাখ কোটি টাকা।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) নতুন পর্ষদসহ সবগুলো ব্যাংক ব্যবস্থাপকদের উপস্থিতিতে প্রথমবারের মতো ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাথে বৈঠক বসেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সমাধানে টাকা ছাপিয়ে সহায়তা না করার নীতিতে অটল গভর্নর। তবে, ব্যাংকগুলোর মধ্যে ঋণ লেনদেনের মাধ্যমে সমাধানের নির্দেশনা দেন গভর্নর। একইসাথে আমানতকারীদের নিশ্চিন্তে থাকার কথা জানান।

গভর্নর বলেন, 'দুই লাখ কোটি টাকা ছাপালে আমাদের ম্যাক্রো ইকোনোমি স্ট্যাবিলিটি নষ্ট হয়ে যাবে। আমাদের এক্সচেঞ্জ রেট হয়তো ১৫০ ছাড়িয়ে যাবে। এটা আমাদের কাম্য নয়। এই সাত বা আটটা ব্যাংকের জন্য কিন্তু আমাদের ৬১টি ব্যাংক ডুবে যাবে না। আমাদের ব্যাংকিং খাত শক্ত এবং শক্তিশালীভাবেই থাকবে। সরকার এই ব্যাংকগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে।'

সভা শেষে এবিবি চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন জানান, ব্যাংকগুলোতে একক এক্সচেঞ্জ রেট রাখা, ঋণ আদায়ে গতি বাড়ানোসহ আর্থিক খাত সংস্কারে সবাই একসাথে কাজ করবে। এছাড়া বৈঠকে নীতি সুদের হার আবারো বাড়ানোর পূর্বাভাস পেয়েছেন ব্যাংকার্সরা।

তিনি বলেন, 'পলিসি রেট বাড়াতেই হবে। এটাই একমাত্র টুল। দু'বছর আগে যদি এটা করা হতো তাহলে আমাদের এই ১১ বা ১২ শতাংশ ইনফ্লুয়েশন হতো না।'

এছাড়া চার দেশে পাচার করা সম্পদ ফেরাতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্ষমতা বাড়াতে ও আইনি সংস্কারে তিনটি টাস্কফোর্স গঠন করার কথা জানান গভর্নর।

তিনি বলেন, 'বিদেশে তারা যে অর্থ পাচার করেছে সেগুলো আনার জন্য আমরা আইনগত এবং আন্তর্জাতিক ইফোর্ট নেবো। এ বিষয়ে আমরা এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংকের সাথে কথা বলেছি। মার্কিন প্রতিনিধির সাথেও কথা হয়েছে। তার আসছেন সামনে আরও।'

যেখানে আর্থিক স্থিতিশীলতা দ্রুত আসলেও খাতের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার দুই থেকে তিন বছর সময়ের প্রয়োজন বলেও জানান গভর্নর।

তিনি বলেন, 'এটা নিয়মিত একটা প্রসেস আমরা তাদের মনিটর করবো। আমরা বোর্ড দিয়েছি, সেই বোর্ডের কার্যক্রম দেখতে চাই। আগেম মতো অবজারভার দিয়ে ঘুমোতে থাকলে হবে না।'

এলসি খোলার চাহিদা কম থাকায় এলসির চাপ এই মুহূর্তে কম। তবে, আটকে থাকা রপ্তানি আয় ফিরলে আরও কিছুটা স্বস্তি ফিরবে বলে জানান ব্যাংকার্সরা।

এসএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর