ব্যাংকপাড়া
অর্থনীতি
0

কোনো অযৌক্তিক দাবি মানা হবে না, যদি এমন কিছু করতে হয় পদত্যাগ করবো: গভর্নর

পুরোনো পর্ষদ ভেঙে দিয়ে এস আলম গ্রুপের নামে থাকা ইসলামী ব্যাংকের নামে বেনামে নেয়া সব শেয়ার নিয়ে নেবে সরকার। দু'একদিনের মধ্যে স্বতন্ত্র পর্ষদ দায়িত্ব নেবেন বলেও জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তবে কোন ব্যাংক সরকারি করার কোন পরিকল্পনা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসব শেয়ার কিনে নিয়ে স্বাভাবিক নিয়মে বোর্ড গঠন ও পরিচালনা পর্ষদ করা হবে। কোনো অযৌক্তিক দাবি মানা হবে না, যদি এমন কিছু করতে হয় পদত্যাগ করবো।’

ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৮২ শতাংশ শেয়ারই নামে বেনামে নিজের করে নেয় এস আলম গ্রুপ। গত সাত বছরের তথ্য বলছে আধিপত্য বিস্তারে এসব শেয়ার নিজের করে রাখার সবধরণের সুযোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রকরা। তাতে ব্যাংকটির ৫০ হাজার কোটি টাকাই এস আলমের পকেটে গেছে। যা ব্যাংকটির মোট ঋণের তিন ভাগের ১ ভাগ।

সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়া নিয়ে প্রায় এক ডজন দাবি জমা পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে। হয়েছে কর্মীদের পক্ষে-বিপক্ষের আন্দোলন। এমন সময়ও বেনামি প্রতিষ্ঠানকে অর্থ ছাড়ের তৎপরতা দেখা যায়। এমন পরিস্থিতিতে সব ধরনের ঋণ দেয়া বন্ধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পুরানো পর্ষদ ভেঙে ইসলামী ব্যাংকে স্বতন্ত্র পরিচালনা পর্ষদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আজ (বুধবার, ২১ আগস্ট) ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ সাত সদস্যের একটি দল সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সাথে। এ সময় তারা নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান।

এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় নবনিযুক্ত গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, এস আলম গ্রুপের ও অর্থলুটের সাথে যারা জড়িত তাদের শেয়ার নিয়ে নেবে সরকার। তবে কোন ব্যাংক সরকারি করার কোন পরিকল্পনা নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসব শেয়ার কিনে নিতে পারবেন ভালো বিনিয়োগকারীরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'যারা এখান থেকে প্রচুর অর্থ আত্মসাৎ করে চলে গিয়েছে তাদের যদি কোনো শেয়ার হোল্ডিং এখানে থাকে সেটা আমরা নিয়ে নিবো। তা যদি নামে বেনামে যেটাই থাকুক। তার মানে সরকারিভাবে আইন অনুযায়ী এস আলম গ্রুপের শেয়ার আমরা নিয়ে নিবো।'

বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর জানান, কোন অযৌক্তিক দাবি মেনে নেয়া হবে না। আগামীতে কোন অনিয়ম বা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক এমন কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না।

গভর্নর বলেন, ‘আমরা ধীরে ধীরে যাবো। এখন ইসলামী ব্যাংক দিয়ে শুরু করেছি। যে ব্যাংকগুলো এমন অবস্থায় আছে তাদের কোনো লেনদেন করতে দেয়া হচ্ছে না ও শেয়ার হস্তান্তরও করতে পাচ্ছে না। এছাড়া তারা কোনো লোনও দিতে পারবে না। কোন অযৌক্তিক দাবি মেনে নেয়া হবে না। যদি করতে হয় তাহলে আমার পদত্যাগপত্রও একসঙ্গে যাবে।’

ব্যাংকখাতের অর্থ পাচার ও লোপাটের ঘটনার অনুসন্ধান ও তদন্ত দুদক, বিএফআইইউ ও সিআইডি একসাথে কাজ করবে বলেও জানান গভর্নর।

tech