ব্যাংকপাড়া
অর্থনীতি
রিজার্ভ, ডলার রেট ও দুর্বল ব্যাংকের অবস্থা ফেরাতে পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রিজার্ভ, ডলারের দাম ও দুর্বল ব্যাংকগুলোর অবস্থা ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আজ (সোমবার, ২৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ ব্যাংকে গভর্নর ‎আব্দুর রউফ তালুকদার ও ডেপুটি গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠকে বসে আইএমএফের প্রতিনিধি দলটি। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বের হয়ে যায় প্রতিনিধি দল।

বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আইএমএফের মধ্যে আলোচনা বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মেজবাউল হক।

মুখপাত্র বলেন, 'ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে দুর্বল ব্যাংকগুলোর অবস্থা ফেরাতে পলিসি নিয়ে আলোচনা করেছে সংস্থাটি।'

রিজার্ভ ও রাজস্বের বিষয় বৈঠকে উঠে আসে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'রিজার্ভ ও রাজস্বের তথ্য নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে গভর্নরের আলোচনা হয়েছে। তারা যেসব তথ্য পেয়েছে, সে তথ্যগুলো এখন পর্যালোচনা করতে তারা।'

ডলার রেট নিয়ে ক্রলিং পেগের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান মেজবাউল হক। তিনি বলেন, 'তাদের সঙ্গে ডলার রেট নিয়ে ক্রলিং পেগের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে ক্রলিং পেগ সিস্টেমে ডলারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দর ব্যাংকগুলোকে নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে।'

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, আর্থিক খাতে জলবায়ুর প্রভাব নিয়ে ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে বলেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ।

এছাড়াও বাংলাদেশের ম্যাক্রো ইকোনমির যে বিষয়গুলো নিয়ে আইএমএফ কাজ করছে, সে বিষয়ে তারা কী করতে চায় এবং বাংলাদেশকে কী করতে হবে- সেসব বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মেজবাউল হক।

ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড় করার আগে শর্ত পূরণ পর্যবেক্ষণ করতে বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছে আইএমএফের প্রতিনিধি দল। ২৪ এপ্রিল থেকে আগামী ৮ মে পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক করবে আইএমএফের ১০ সদস্যের এ দলটি।

এর মধ্যে ৫ মে পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ এবং পূর্বের তথ্যের সঙ্গে সার্বিক দিক মিলিয়ে দেখবে। পরে ৬ মে থেকে উচ্চপর্যায়ে বৈঠক শুরু হওয়ার কথা। সবশেষ ৮ মে আইএমএফ তাদের পর্যবেক্ষণ, পরামর্শ ও সিদ্ধান্তের কথা জানাবে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সাড়ে তিন বছরের মেয়াদে ৪.৭ বিলিয়ন ঋণ কার্যক্রমের বিপরীতে আইএমএফ বেশকিছু শর্ত দেয়। রিজার্ভ ছাড়া প্রায় সব শর্তই পূরণ করে দুই কিস্তির অর্থ ছাড় পায় বাংলাদেশ।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আইএমএফের প্রথম কিস্তি পাওয়ার পর বাংলাদেশ দ্বিতীয় কিস্তি পায় গত ডিসেম্বরে। দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার আগে সময়ভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ। বিশেষ করে গত জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।

তবে রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা কমাতে আইএমএফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে যে অব্যাহতি চেয়েছিল বাংলাদেশ। আইএমএফ সেটি অনুমোদন করায় ডিসেম্বর শেষে রিজার্ভ সংরক্ষণের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয় ২৬.৮ বিলিয়ন ডলার।

এমএসআরএস