এমন একসময়ে এই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে যখন আর্থিক খাত নানা সমস্যায় টালমাটাল। বেশিরভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাহকরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ ধারে কার্যক্রম পরিচালনা করছে সংকটে পড়া কয়েকটি ব্যাংক। আবার ঋণখেলাপিদের দাপট আগের মতোই আছে। এমন পরিস্থিতিতে অপরিকল্পিতভাবে ব্যাংক একত্রীকরণ শুরু হয়েছে।
নিষধাজ্ঞা নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সাংবাদিকরা আজ (বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল) সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান নেন। বিষয়টি সমাধানে বেলা ১১টার দিকে অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠক করেন। এতেও কোনো সমাধান হয়নি। তাই আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করবে ইআরএফ।
সাংবাদিকরা বলেন, বড় ঋণখেলাপি ও অনিয়মে জড়িত ব্যবসায়ী ও ব্যাংকগুলোকে গণমাধ্যম থেকে আড়ালে রাখতে বর্তমান গভর্নর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর মাধ্যমে তার প্রকৃত চরিত্র প্রকাশ পাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর আগে কখনো এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে সাংবাদিকরা ব্যাংকের নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র (প্রবেশ পাস) নিয়ে শুধু মুখপাত্রের কাছে যেতে পারবেন। তবে কোনো কর্মকর্তা যদি সাংবাদিকদের পাস দেন, সেক্ষেত্রে তারা শুধু সেই কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন। তবে আগের মতো তারা অবাধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বিভাগে প্রবেশ করতে পারবেন না।’
এ ঘটনাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ মন্তব্য করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘সাংবাদিকতা রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত পেশা। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করা ও তথ্য পাওয়ার অধিকার রয়েছে। জনগণ সাংবাদিকদের মাধ্যমেই তথ্য জেনে থাকে। এখন গভর্নর কি লুকাতে চাচ্ছেন?’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা সবখানেই প্রয়োজন। সুশাসনের বিপরীত হয় এমন কোনো পদক্ষেপ কাম্য নয়। সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে না দেওয়া অগ্রহণযোগ্য, এর অবসান হওয়া দরকার।’