লোকসান কাটিয়ে সাফল্য; আগামীতে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির পরিকল্পনা প্রগতি ইন্ড্রাস্ট্রিজের

অ্যাসেম্বল করে গাড়ী প্রস্তত করছেন | ছবি: এখন টিভি
0

দেশে সরকারি বিভিন্ন শিল্প-কারখানা বছরজুড়ে লোকসান করলেও গাড়ি বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ড্রাস্ট্রিজ। গত তিন বছরে প্রায় ১২০ কোটি টাকা লাভ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। কর্মকর্তারা বলছেন, গত জুলাই আন্দোলনে সরকারি নানা প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বেড়েছে অর্ডার। আগামীতে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির স্বপ্ন দেখছে প্রগতি।

ইংল্যান্ডের জেনারেল মোটরসের সহযোগিতায় ১৯৬৬ সালে দেশে যাত্রা শুরু করে সরকারিভাবে গাড়ি তৈরির কারখানা প্রগতি ইন্ড্রাাস্ট্রজ। সীতাকুণ্ডে অবস্থিত এই কারখানা বর্তমানে বছরে প্রায় দেড় হাজার গাড়ি বাজারজাতে সক্ষম। মিতসুবিশি, ইসুজু ও নিশানসহ বেশ কিছু নামিদামি ব্র্যান্ডের গাড়ি সংযোজিত হয় এখানে।

প্রতিষ্ঠানটি মূলত সচিবালয়, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীসহ সরকারি নানা দপ্তরে গাড়ি সরবরাহ করে। দেশে যে কয়টি সরকারি প্রতিষ্ঠান লাভ করছে তার একটি এ প্রগতি। তবে করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, দেশের ডলার সংকট মিলিয়ে সরকারি গাড়ি ক্রয়ে বেশ কয়েকবার নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে কমেছে প্রগতির মুনাফা।

২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি লাভ করে সাড়ে চার কোটি টাকা। পরের বছর ৭২ কোটি টাকা। সবশেষ অর্থবছরে ৪৫ কোটি টাকা। তবে এবার ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে রাষ্ট্রায়ত্ত গাড়ি সংযোজনকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠানটি। জুলাই অভ্যুত্থানে সরকারের বহু গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংস হয়েছে। ফলে বিভিন্ন দপ্তরে নতুন গাড়ির প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। ডলার সংকটও অনেকটাই কাটিয়ে উঠছে বাংলাদেশ। সবমিলিয়ে আশাবাদী কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন:

শিল্প মন্ত্রণালয় সচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘আমরা পুলিশের আমরা জুডিশিয়ারির বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে আমরা প্রচুর পরিমাণে চাহিদা পেয়েছি। আশা করি আমরা যে উদ্দেশ্য নিয়ে প্রগতি করেছি সেটি সফল হবে।

গতানুগতিক গাড়ির পাশাপাশি ভবিষ্যতে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির স্বপ্ন দেখছে প্রগতি। এজন্য বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রাথমিক আলোচনাও শুরু হয়েছে।

প্রগতি ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আলম বলেন, ‘যেহেতু সরকার ইনভাইরনমেন্ট ফ্রেন্ডলি একটি ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম ডেভলপমেন্ট করতে চাচ্ছে, সেক্ষেত্রে ইলেক্ট্রিক ভেইকেল যেটি সেদিকে আমরা নজর দিচ্ছি। যেহেতু আমাদের এক্সপার্টিজম এখনো গড়ে ওঠেনি আমরা এখনো জয়েন মাধ্যমে সেই কাজটি করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি।’

বর্তমানে বাস ট্রাক অ্যাম্বুলেন্স কার, মাইক্রবাসসহ বেশ কয়েক ধরনের গাড়ি সংযোজন করে আসছে প্রগতি। সম্প্রতি জাপানের টয়োটা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে। তবে গেলো ৬০ বছর ধরে গাড়ি সংযোজনের কাজ করলেও এখনও নিজেদের কোনো গাড়ির ব্র্যান্ড দাঁড় করাতে পারেনি প্রগতি। প্রতিষ্ঠানটি এখনও সে পর্যায়ে সক্ষমতা অর্জন করেনি বলে মনে করছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

শিল্প মন্ত্রণালয় সচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, অ্যাসেম্বলির পাশাপাশি ইঞ্জিন তৈরি করাসহ অন্যান্য বিষয়গুলো সেগুলো আমরা করার চেষ্টা করছি। এমনও হতে পারে আমরা বাহিরে থেকে ইঞ্জিন নিয়ে এসে বডি অ্যাসেম্বলি করে আমরা নিজেরাই ব্র্যান্ড তৈরি করব।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ২৭০টি গাড়ি বিক্রি করেছে প্রগতি। এর আগের বছর বিক্রি হয়েছিল ৪৩৩ কোটি টাকার ৫৪৩ টি গাড়ি।

এফএস