বাণিজ্যিক রাজধানীর তকমা পেলেও প্রতিবছরই বর্ষায় বৃষ্টিতে ডুবে যায় চট্টগ্রাম নগরী। নগরবাসীর দুর্ভোগ নিরসনে চারটি সংস্থার আওতায় প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চললেও মেলেনি সুফল। এজন্য বিভিন্ন সংস্থার কাজে সমন্বয়হীনতা, দুর্নীতি ও যথাযথ পরিকল্পনার অভাবকে দুষছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। আর একে অপরের ওপর দোষ দিয়ে দায় সেরেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ অবস্থায় জলাবদ্ধতা নিরসনে ৪ উপদেষ্টাকে তদারকির দায়িত্ব দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। এরই মধ্যে ১১টি করণীয় নির্ধারণ করে তা শেষ করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে চার মাসের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। এরপরই শুরু হয় তোড়জোড়।
দায়িত্ব নেয়ার উপর চট্টগ্রামে প্রথম সফরেও আগামীতে জলাবদ্ধতা শূন্য পর্যায়ে নামিয়ে আসার নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা। সব সংস্থা সম্মিলিতভাবে কাজ করায় এই মৌসুমে চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ কমবে বলে প্রত্যাশা নগরবাসীর।
হাজার হাজার কোটি টাকা খরচেও চট্টগ্রামকে পরিকল্পিত ও পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়তে নগর সরকার গঠনের বিকল্প নেই বলে মনে করেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সিটি গভর্নমেন্টের দাবিও জানান তিনি। এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা ইতিবাচক সাড়া দেয়ায় আশাবাদী মেয়র। এসময় সিটি করপোরেশনের নালা ও খাল পরিচ্ছন্নতার কাজের জন্য যন্ত্রপাতি কিনতে ৩শ' কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ারও অনুরোধ জানান মেয়র।
চট্টগ্রাম সফরে কালুর ঘাট সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের পাশাপাশি নাগরিক সমাজের সঙ্গে সভায় উঠে আসে বেশ কিছু ইস্যু। এসময় চট্টগ্রামে বন্ধ হয়ে যাওয়া লোকাল ট্রেন পুনরায় চালু, নতুন হাসপাতাল নির্মাণ, নগরীর যানজট নিরসনে সড়ক উন্নয়ন এবং চট্টগ্রাম বন্দরকে বিশ্বমানের বন্দরের রূপান্তরের তাগিদ দেন প্রধান উপদেষ্টা। সব মিলিয়ে এই সফরে চট্টগ্রামের উন্নয়নকে প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ গুরুত্ব দেয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরা।
বন্দরের চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে ভারতের সেভেন সিস্টার এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপিত হলে বিদেশী বিনিয়োগ,নতুন কর্মসংস্থান তৈরি ও দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন অংশীজন ও ব্যবসায়ীরা।